‘আবু সাঈদ-মুগ্ধরা মরে না’ : এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন
মোল্লা তানিয়া ইসলাম তমা, তুরাগঃ
সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেমে পুলিশের গুলিতে প্রথম নিহত হন রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র আবু সাঈদ। আন্দোলনের একপর্যায়ে নিরস্ত্র সাঈদ পুলিশের সামনে বুক পেতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখনই পুলিশ গুলি ছুঁড়ে নির্মমভাবে হত্যা করে তাকে।
সাঈদকে হত্যার দৃশ্য দেখেই মূলত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা কর্মসূচি ছড়িয়ে পড়ে গোটা বাংলাদেশে। এরপর কোটা সংস্কার আন্দোলনে আরেকটি ইতিহাস সৃষ্টি করা দৃশ্য ছিল মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ’র পানি বিতরণের মুহূর্ত। তিনিও নিহত হন এই সংঘাতের বলি হয়ে।
নিহত এসব শিক্ষার্থীরা ‘অমর’ বলে মন্তব্য করেন যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ সভাপতি ও ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সাবেক সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন।
সোমবার ( ১২ই আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজধানীর তুরাগের কালিয়ারটেক কবরস্থানে নিহত মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ ও রিদওয়ান শরিফ জয়ের কবর জিয়ারত ও শ্রদ্ধা নিবেদন কালে উপরোক্ত কথা গুলো বলেন তিনি ।
এসময় এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন আরও বলেন, গত ১৬ জুলাই বেলা আড়াইটার দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ (২৫) গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন । পরে তিনিই হয়ে ওঠেন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নায়ক ।
অন্যদিকে, এই আন্দোলনের আলোচিত একটি বাক্য হয়ে ওঠে মুগ্ধ’র দেওয়া সেই ডাক ‘পানি লাগবে কারো, পানি, পানি?’ কারণ পানি বিতরণের মাঝেই তিনি গুলিবিদ্ধ হন রাজধানীর উত্তরাস্থ আজমপুরে ।
গত ১৮ জুলাই ওই এলাকায় মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ যখন পানির কেস হাতে নিয়ে ক্লান্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে পানি বিতরণ করছিলেন, তখন তিনি ঠিক মতো তাকাতেও পারছিলেন না । এক ভিডিওতে দেখা যায়, টিয়ারগ্যাসের কারণে চোখ জ্বালাপোড়া করা সত্ত্বেও তৃষ্ণার্তদের খুঁজছেন আর পানি বিতরণ করছেন মুগ্ধ । কিন্তু সেই পানি বিতরণ বেশিক্ষণ চালিয়ে যেতে পারেননি তিনি। কারণ আন্দোলনকারীদের উপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুলি চালালে একটি গুলি মুগ্ধর কপালে লাগে ।
পরে বন্ধুরা দ্রুত তাকে ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নিয়ে যান । কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মারা যান মুগ্ধ ।
মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ ও রিদওয়ান শরিফ জয়ের কবর জিয়ারত ও শ্রদ্ধা নিবেদন কালে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তুরাগ থানা বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান মেম্বার, তুরাগ থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হোসেন মাদবর, তুরাগ থানা যুবদলের সাবেক সভাপতি আলমাস আলী, তুরাগ থানা যুবদলের সাবেক সাধারন সম্পাদক মামুন পারভেজ তন্ময়, যুবদল নেতা সোহাগ হোসেন, মনির হোসেন, তুরাগ থানা কৃষক দলের সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা, ছাত্রদল নেতা হারুন-উর-রশিদ, তুরাগ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারন সম্পাদক আরিফ হোসেন, ছাত্রদল নেতা রাশেদুজ্জামান ইকবাল, তুরাগ থানা ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক জাকির হোসেন, বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন, হোসাইন আল এরশাদ, শহিদুল ইসলাম শহীদ, হাসিব আহমেদ, রনি আহমেদসহ স্থানীয় বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।
https://www.songbadtoday.com/?p=91935