বুধবার , ২১শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
ছালেহা বেগম ৭০ বছরের এক বৃদ্ধা মহিলা। বাড়ি কোথায় কেউ জানে না। থাকেন একটি স্যাঁতস্যাঁতে ঝুপড়ি ঘরে। স্বামী বা সন্তান কেউ নেই । ভিক্ষাবৃত্তি, শরীর এবং দু-পায়ের শক্তি হারিয়ে এখন তিনি ঘরবন্দি। দিনে একবেলা খেয়ে বেঁচে থাকাই দায় হয়ে পড়েছে। মিলছে না কোন প্রকার সহযোগীতাও। ঝড়-বৃষ্টি কিংবা শীত-গ্রীষ্মতে দিন কেটে গেলেও কেউ খোঁজ রাখেনি ছালেহার। একটি ঘর বা ভাতা কোনটাই মেলেনী তার। দেখার যেন কেউ নেই।
নোয়াখালী সোনাইমুড়ী চৌরাস্তা থেকে ৮-১০ কিঃমিঃ পরেই ঢাকা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে নতুন বাজার (চাষীর হাট) এলাকায় বৃদ্ধা এই ছালেহা বেগমের বসবাস। অন্যের বাড়ী থেকে পুরাতন কয়টা টিন আর কয়েক টুকরো রেকসীন দিয়ে কলা গাছের বাগানের ভেতরেএকটি ঝুপড়ি ঘর বানিয়ে সেখানে তিনি বসবাস করেন। সেই ঘরেই খেয়ে না খেয়েই কাটে তার দিনরাত।
বৃদ্ধা ছালেহা কে বারবার প্রশ্নের পর তিনি জানায়, দু-পায়ের শক্তি হারিয়ে অচল হওয়ার পর এখন আর আগের মতো চলাফেরা অথবা কথা বলতে পারি না। স্বামী সন্তানের কথা জিজ্ঞেস করতেই দু-চোঁখের পানি ছেড়ে বললেন তার কেউ নেই। এর বেশি কিছু জানতে চাইলে তিনি মুখ পিরিয়ে নেন। ভিটে-মাটিহীন এই ছালেহা বেগমের দিন কাটে এখন প্রায় না খেয়েই। কেউ তাকে সহযোগিতাও করেন না বলে জানান তিনি।
আবার ঝড়-বৃষ্টি কিংবা শীত-গ্রীষ্মতে তাকে দিন কেটে গেলেও কেউ খোঁজ নিতে আসে না। রোগাক্রান্ত হয়ে তিনি দিনরাত মুয়ে থাকেন নোংরা মাটির বিছানায়।
অসহায় এই ছালেহা বেগম কে নিয়ে এলাকার কয়েকজন যুবক কয়েক বার সহযোগিতা কামনা করে প্রশাসনিক ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দৃষ্টি কামনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লেখালেখি করেন। কিন্তু পাওয়া যায়নি কোন উত্তর।
স্থানীয় যুবক সোহেল মিয়া জানায়, ছালেহা কোথা থেকে এসেছে আমরা জানি না । তবে দীর্ঘদিন ধরে এই কয়েকটি কলাগাছের আড়ালে তিনি ঝুপড়ি ঘরটিতে বসবাস করছেন। পথচারী ছাড়া তেমন কাউকে দেখিনি তাকে সহযোগিতা করতে। এখন যদি প্রশাসনিক অথবা জনপ্রতিনিধিদের কেউ তাকে বৃদ্ধাশ্রম অথবা সরকারি কোন যায়গায় রাখতো তাহলে ভালো হতো। কারণ সেতো কারোনা কারো স্বজন।