বুধবার , ১৯শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৫ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
রাজধানীর মিরপুর এলাকায় গাড়ির ধাক্কায় মহিতুল আহম্মেদ রনি (৪২) নামে এক সফটওয়্যার প্রকৌশলী নিহতের ঘটনার মামলায় আসামি ‘বদলে দেওয়ার’ অভিযোগ করেছেন নিহতের স্ত্রী সাবরিনা মোসতারিন। তবে পুলিশ বলছে আসামি বদল করা সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিহতের স্ত্রী সাবরিন মোসতারিন দাবি করেন, গত ১৪ ডিসেম্বর বিকালে তার স্বামী মহিতুল আহম্মেদ রনি অফিস থেকে বের হয়ে হেঁটে বাসায় ফেরার পথে সাদা রঙের একটি গাড়ি (ঢাকা মেট্রো গ-৪৫-২০৯৫) তাকে চাপা দেয়। সেইসঙ্গে আরো একটি রিকশা, মোটরসাইকেল ও গাড়িকে ধাক্কা দেয়। ঘটনার পর স্থানীয়রা গাড়িসহ এর চালক ইমরান ফাহমিকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশে দেন। পরে ইমরানকে আসামি মিরপুর থানায় একটি মামলা করা হয়। এখন এজাহারে সেই আসামির নাম বদলে অন্য একজনকে আসামি করা হয়েছে।
তবে মামলার বাদীর দাবি অস্বীকার মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাজিরুর আজ শনিবার রাতে বলেন, ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামির নাম বদলের কোনো সুযোগ নেই। মামলার বাদী তৌহিদুল ইসলাম নামে একজনকে এজাহারে আসামি করেছিলেন। সেই অনুযায়ীই মামলা হয়েছে।
ওসির বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে সাবরিনের দাবি, ওই দিন সন্ধ্যায় মিরপুর থানায় গিয়ে তিনি এজাহারের যে প্রিন্টেড কপিতে স্বাক্ষর করেছিলেন তাতে আসামি হিসেবে ইমরানের নামই ছিল। পরে দুর্ঘটনাস্থলের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ভিডিওতেও এক চিত্র পাওয়া গেছে।
তবে এ বিষয়ে ওসি মোস্তাজিরুর রহমান বলেন, গাড়িটির মালিক হলেন ইমরান ফাহমি। ঘটনার সময় তিনি গাড়িতেই ছিলেন। তখন গাড়িটির চালকের আসনে ছিলেন তৌহিদুল ইসলাম। দুর্ঘনার পর তৌহিদুল ইসলাম আহত মহিদুল ইসলাম রনিকে নিয়ে হাসপাতালে যান। তখন ঘটনাস্থলে থাকা ইমরানকে লোকজন সন্দেহ করে।
এরপর পুলিশ সেখানে গিয়ে ইমরানকে থানায় নিয়ে যায়। পরে চালককেও থানায় ডেকে ’আনা হয়। এরপর ঘটনাস্থলের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখে নিশ্চিত হওয়া যায় তৌহিদুলই ঘটনার জন্য দায়ী।
এদিকে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হাবিবুর রহমান নামের একজন জানান, দুর্ঘটনার পরপরই দৌড়ে এসে তারা একজনকে (প্রকৌশলী রনি) রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ঘটনাস্থল থেকে ইমরান নামে গাড়ির ওই চালককে আটক করেন।
তিনি দাবি করেন, দুর্ঘটনার পর ইমরান নামের লোকটি জানিয়েছিল, ‘ভুলে গাড়ির এক্সিলারেটরে চাপ পড়ে ঘটনাটি ঘটেছে।’
নিহত মহিতুলের ভগ্নিপতি ঢাকা শিশু হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক আবু জানান, দুর্ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন গাড়িসহ ইমরান ফাহমি নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছিলেন। পরে থানায় গেলে পুলিশ তাকে বলেন, এজাহারে লেখেন ‘গাড়ি রেখে চালক পলাতক’।
পরে মামলা না করে তিনসহ সঙ্গে থাকা পরিবারের অন্যরা থানা থেকে বের হয়ে যান। এরপর রাত ২টার পরে থানায় গিয়ে মামলা করতে চাইলে ডিউটি অফিসার বলেন, ‘ওসি সাহেব নেই’। পর দিন সকালে থানায় গেলে পুলিশ একটি ভিডিও দেখিয়ে তাকে বলেন, উনি তৌহিদুল আলম। তিনিই গাড়ি চালাচ্ছিলেন বলে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তখন আমরা বললাম ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, তারা ইমরান নামে একজনকে গাড়িসহ ধরে দিয়েছেন। পুলিশের চাপা চাপিতে এরপর আমরা আর কথা বাড়াতে পারিনি।’