চাঁদপুরে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার
বঙ্গবন্ধু মঞ্চে স্মৃতিচারণ
মানিক দাস, চাঁদপুরঃ
চাঁদপুরে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার বঙ্গবন্ধু মঞ্চে স্মৃতিচারন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি গোলাম কুদ্দুস।
প্রধান আলোচকের বক্তব্য রাখেন ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান।
মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক স্মৃতিচারণে বাংলাদশ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটর চেয়ারম্যান ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম কুদ্দুছ বলেছেন, একসময় এদেশে ঠিকমত কথাও বলতে পারতাম না।
কিন্তু বর্তমানে আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারি। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসংরক্ষণ পরিষতের স্টলে গিয়ে দেখলাম মুক্তিযোদ্ধারা জ্বলজ্বল করে জ্বলছে৷
গোলাম কুদ্দুছ বলেন, কেন বঙ্গবন্ধু কারাগারে তার সারাটি যৌবন কাটিয়েছিলেন, কেন তিনি এদেশকে স্বাধীন করেছিলেন?কতগুলো,নীতি আদর্শে সুপ্রতিষ্ঠিত করতেই এদেশকে বঙ্গবন্ধু স্বাধীন করেছিলেন। প্রতিটি নাগরিক যেন তার সঠিক অধিকার পায়।
বঙ্গবন্ধু চেয়ে ছিলেন এদেশে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। তার জন্যেই তিনি এদেশকে স্বাধীন করেছিলেন। সসান অধিকার নিয়ে যেন সাধারণ নাগরিক বাঁচতে পারে।
তিনি বলেন, মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসা প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই বাঙ্গালি জাতির রাস্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। বাঙালি হওয়ার মধ্যে রয়েছে মানবতা বোধকে জাগ্রত করা। বাংলাদেশ হবে এমন একটি রাষ্ট্র যে রাষ্ট্রে সকল ধর্মের মানুষ একসাথে মিলে মিশে বসবাস করবে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে এদেশকে হত্যা করা হয়েছিলো। শুধু বঙ্গবন্ধুকে নয় তাঁর পুরো পরিবারকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিলো। একাত্তরের পরাজয়ের পরিশোধ নেয়ার জন্যেই এ হত্যাকান্ড করা হয়েছিলো। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে পাকিস্তানি বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করতেই এ হত্যাকান্ড চালিয়েছিলো।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তবে ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো থেমে নেই। সেই বুলেট এখনো তাড়া করে বেড়াচ্ছে।
প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মরহুম অ্যাডঃ সিরাজুল ইসলামের সুযোগ্য সন্তান ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান। তিনি জাতির পিতাসহ মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বলেন, পৃথিবীর সকল মানুষ জাতির পিতাকে বিশ্বের নেতা হিসেবে দেখেন।
বঙ্গবন্ধু হাজার বছরের আরদ্ধ মানুষ। পৃথিবীর সবথেকে ছোট্ট একটি ভুখন্ড হলেও এখন সবাই বাংলাদেশের গুরুত্বের চোখে দেখে। পাকিস্তানেরা ধর্মকে পুঁজি করে এদেশের মানুষদের অত্যাচার করেছিলো।
তিনি আরো বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি। আমরা মুক্তিযুদ্ধকে বুকে লালন করি। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আমরা সবসময়ই সোচ্ছার।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করতে সবসময়ই চক্রান্ত চলেছে, এখনো চলছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যার নেতৃত্বে তাদের চক্রান্তকে প্রতিহত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ এখন উন্নয়নের শিখরে পৌঁছে গেছে। মেট্রোরেলসহ দেশে একের পর এক উন্নয়ন হচ্ছে।
তিনি বলেন, আজকের প্রধান অতিথি যিনি তিনি চাঁদপুরের মানুষের সাথে তাঁর আত্মার সম্পর্ক রয়েছে। তিনি চাঁদপুরের বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকান্ডে রেখেছিলেন। জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক একজন মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক ভূইয়া। যারা ৩১ বছর ধরে এই মুহূর্তেদের বিজয় মেলা করে আসছেন তাদের প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাই। মুক্তিযুদ্ধের কথা বললেই বঙ্গবন্ধুর কথা বলতে হয়। তার জন্য আমরা এ ভূখণ্ড আমরা পেয়েছি।
তিনি দুইবার ফাঁসির মঞ্চে গিয়ে ছিলেন। তার যৌবনের কত গুলো বছর কারাগারে কাটিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুকে বিশ্ব বাঙ্গালির নেতা হিসেবে দেখেনা বিশ্ব বঙ্গবন্ধুকে বিশ্ব নেতা হিসেবেই দেখে। বাংলাদেশ ছোট একটি ভূখণ্ড। আমরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে একটি মুসলিম রাস্ট্র চেয়েছিলাম। পাকিস্তানে এখনও তাদের দেশের মসজিদে বোমা হামলা করে।
তারা বঙ্গবন্ধুর নামে প্রবাগান্ডা ছরিয়েছে। বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধুই। তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। আমি জাতীয় চার নেতাকে ও স্মরণ করি। আমার বাবা অ্যাডঃ সিরাজুল ইসলাম প্রাদেশিক সরকারের সদস্য ছিলেন। যাদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি, স্বাধীনতাকে হৃদয়ে ধারন করেছি বলেই আমারা মুক্তিযুদ্ধাদের আজো সম্মান করি।একটি চক্র এখনো স্বাধীনতাকে ভুলুন্ঠিত করতে তৎপর। তারা যে কোনো সময় পূর্বের ভূমিকায় চলে আসবে।
এদেশকে তারা তলা বিহীন ঝুড়ি করেছিল। তারা বঙ্গবন্ধু কে হত্যা করেছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল এদেশকে আবার পাকিস্তানি আদলে নিয়ে যাওয়া। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ পরিচালিক হচ্ছে।যুদ্ধাপরাধীর বিচার হয়েছে।
জঙরগিবাদ নিধন হয়েছে। তারপর ও তারা মাথাচারা দিতে চেয়েছে।বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল একটি সুখি সমৃদ্ধশালী জাতি হিসেবে এদেশ কে প্রতিষ্ঠা করা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ দেশে মেট্রো রেল, পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু ট্রানেল হয়েছে।
আজকে আমরা উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। আমাদের প্রতিপক্ষরা চায় এদেশ উন্নত না হয়ে ভিক্ষোকের জাতী করতে চায়।
স্মৃতিচারণ কমিটির আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াকুব আলী মাষ্টারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা যুবলীগের সি. যুগ্ম আহবায়ক মাহফুজুর রহমান টুটুল, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি তপন সরকার।
সাংবাদিক এমআর ইসলাম বাবুর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহাসচিব হারুন আল রশিদ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন স্টিয়ারিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মহসিন পাঠান, জেলা কমান্ড ইউনিটের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাত হোসেন সাবু পাটওয়ারী, কেন্দ্রীয় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সদস্য মো. রেজাসহ আরো অনেকে।
এরআগে প্রধান অতিথি মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিরক্ষন স্টল পরিদর্শন করেন। পরে চাঁদপুর জেলার সকল সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান করা হয়।
Post Views: ৬০