শনিবার , ২২শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৮ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
হৃদয় রায়হান, কুষ্টিয়াঃ
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ৮ নম্বর যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের তালা প্রায় ৯ দিন পরে ভেঙে দিয়েছেন কয়েক শত নারী।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল সোয়া ১১ টার দিকে হাতুড়ির আঘাতে তারা তালা ভাঙেন।
পরে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল করে চেয়ারম্যানের বাড়িতে যান এবং চেয়ারম্যানকে বাড়ি থেকে তুলে পরিষদে এনে সেবা নেন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পরিষদ চত্বরের বাইরে ও ভিতরে শত শত নানা বয়সি নারী।
চেয়ারম্যান কক্ষে পরিস্কার পরিছন্নের কাজ করছেন গ্রাম পুলিশ। আর পরিষদের বারান্দায় বসে জন্মনিবন্ধনের সনদে স্বাক্ষর করছেন চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান। তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছেন নারীরা।
এসময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নারীরা বলেন, মিথ্যা দোষে একটি পক্ষ চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে তালা লাগিয়েছিল।
সেজন্য চেয়ারম্যান পথে ঘাটে, বনে বাগানে বসে সই সাক্ষর করছিল। অনেকে পরিষদে এসে ফিরে যাচ্ছিলেন। এতে চরম জনদুর্ভোগ হচ্ছিল। সেজন্য হাতুড় দিয়ে কার্যালয়ের তালা ভেঙে তারা চেয়ারম্যানকে বাড়ি থেকে তুলে পরিষদে এনেছেন।
যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, ষড়যন্ত্র করে কে বা কাহারা ছুটির রাতে পরিষদ চত্বরে ছাত্রলীগের কেক কেটেছিল। সেজন্য বিএনপির লোকজন কার্যালয়ে তালা লাগিয়েছিলেন। এতে জনগণের ভোগান্তি হচ্ছিল। তাই সোমবার শত শত সেবা প্রত্যাশী নারীরা তালা ভেঙে তাকে পরিষদে নিয়ে এসেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ৪ জানুয়ারি রাতে যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ছাত্রলীগের ৭৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে কেক কেটে বিভিন্ন শ্লোগান দেওয়া হয়। ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানার নেতৃত্বে এই কেক কাটা হয়।
পরে কেক কাটার ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। এর প্রতিবাদে ওই দিন রাতেই ইউনিয়ন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা চেয়ারম্যান কার্যালয়ে তালা দেন।
তারপর ৫ জানুয়ারি দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল করে পরিষদ থেকে সচিব, গ্রাম পুলিশ ও সেবা প্রত্যাশীদের বের করে দিয়ে পরিষদ ভবনের প্রধান ফটকের গেটে তালা লাগিয়ে দেন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
পরে খবর পেয়ে ৬ জানুয়ারি দুপুরে পরিষদ চত্বরে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন থানার ওসি মো. সোলায়মান শেখ। বৈঠক শেষে তালা খুলে দেন নেতাকর্মীরা।
এরপর স্থানীয় নারীরা চেয়ারম্যান কার্যালয়ে তালা ভাঙে দেন। যদুবয়রা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম আসাদ বলেন, পরিষদের বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া আছে। সরকারের কাছে সুষ্ঠ বিচার চাই।
কুমারখালী থানার ওসি মো. সোলায়মান শেখ বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। কয়েক শত নারী একত্রিত হয়ে কার্যালয়ের তালা ভাঙার খবর সচিব জানিয়েছেন বলে জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, পরিষদের ঘটনায় দুইটি লিখিত অভিযোগ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনা পেলে তা বাস্তবায়ন করা হবে।