বুধবার , ২২শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৮ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধিঃ
টানা বৃষ্টি ও ভারতের উজানের পানিতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। যার কারণে পৌরসভাসহ উপজেলার ১৩ ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্ধি হয়ে পড়েছেন।
বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে আঞ্চলিক সড়ক যোগাযোগ। বন্যার পানি প্রবেশ করেছে উপজেলা পরিষদ ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। যার কারণে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে।
ভেসে গেছে বিভিন্ন মাছের প্রজেক্ট, দীঘি ও পুকুর। এতে কয়েক কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। মরে গেছে বেশ কয়েকটি পোল্ট্রি ফার্মের বিপুল পরিমাণ মোরগ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত দুইদিনের টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের পানির চাপে চৌদ্দগ্রাম পৌরসভাসহ উপজেলার ১৩ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। যার কারণে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানি বন্ধি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
এতে করে সুপেয় পানির সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। রাতভর বৃষ্টিতে উপজেলার অধিকাংশ মাছের প্রজেক্ট, দীঘি, পুকুর ও বয়লার মোরগ ভেসে গিয়ে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে ।
বন্যার পানিতে উপজেলা পরিষদের প্রবেশ করায় নাগরিক সেবা বন্ধ রয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বুক সমান পানি প্রবেশ করেছে। এতে করে জরুরী সেবাসহ সকল চিকিৎসা সেবা ও হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের খাবার সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বন্যার পানিতে সড়কগুলো ভেসে যাওয়ায় আঞ্চলিক সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে করে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বৃদ্ধি পেয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গিয়ে দেখা যায়, বন্যার পানি হাসপাতালে প্রবেশ করায় জরুরী ও বর্হিবিভাগে কোন চিকিৎসক নেই।
হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদেরকে ছাড়পত্র দিয়ে বিদায় করা হলেও বুক সমান পানি থাকায় রোগীরা বাড়িঘরে ফিরতে পারছে না।
এ সময় বড় ট্রলিতে করে হাসপাতাল থেকে রোগীরা বের হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে দেখা গেছে। কেএম ফিশারীজের মালিক মোঃ খোরশেদ আলম বলেন, ‘আকস্মিক বন্যায় দুইটি দীঘি ও তিনটি পুকুর ভেসে আনুমানিক ৫০ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে’।
রিমি পোল্ট্রি ফার্মের মালিক মিজানুর রহমান চৌধুরী টিটু বলেন গত দুদিনের বৃষ্টির পানিতে মঙ্গলবার ভোরে আমার লেয়ার বয়লার ফার্মের ৫০ লক্ষ টাকার মোরগ বৃষ্টির পানিতে ভেশে যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘আকস্মিক বন্যাতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বুক সমান পানি প্রবেশ করেছে।
জরুরী ও বর্হিবিভাগে পানি বৃদ্ধি পাওয়াতে স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ রয়েছে। এক্স-রে ও ইপিআই টিকা রুমেও পানি প্রবেশ করেছে। হাসপাতালের আবাসিক কোয়ার্টারগুলোতে পানি প্রবেশ করায় চিকিৎসক ঘর বন্ধি হয়ে পড়েছে। যার কারণে হাসপাতালে ভর্তিকৃত সকল রোগীকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে’।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ‘টানা বৃষ্টি ও ভারতের উজানের পানির কারণে সমগ্র উপজেলায় বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা পরিষদ এলাকায় পানি প্রবেশ করায় নাগরিক সেবা বন্ধ রয়েছে। পৌর এলাকায় পানি নিস্কাশন করতে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মাঠে কাজ করছে। তবে ঠিক কত হাজার মানুষ পানিবন্ধি রয়েছে তা এখনো নিশ্চিত করা যাচ্ছে না’।