শনিবার , ২২শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৮ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মো: তৈয়ব আলী (৪৫) ও জহিরুল ইসলাম(৪৫) নামের পৃথক দুই ব্যক্তির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার সকালে উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে নিহতের বসতঘরের সামনে থেকে তৈয়ব আলী ও শুভপুর ইউনিয়নের কটপাড়া গ্রামে নিজ বসতঘর থেকে জহিরুল ইসলামের(৪৫) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তথ্য নিশ্চিত করেন চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ।
নিহত তৈয়ব আলী বিয়ের পর থেকে শ্বশুর বাড়ি রাঙ্গামাটিয়ায় থাকেন। তার স্ত্রী রহিমা বেগম বলেন, গত শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে আমার ছেলে আবদুল করিম জনি পাশ্ববর্তী নোয়াপাড়া গ্রামের এরশাদ হোসেনের মেয়ে মাদরাসা ছাত্রী মাইমুনা সুলতানা লুুবনাকে নিয়ে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় লুবনার মা মনোয়ারা বাদী হয়ে চৌদ্দগ্রাম থানায় আমাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
এ সময় তারা থানা পুলিশ ও কতিপয় বহিরাগত লোকজন নিয়ে এসে দ্রুত তাদের মেয়েকে ফিরিয়ে না দিলে আমাদের প্রাণে হত্যা করার হুমকি সহ গ্রাম ছাড়া করার হুমকি দেয়।
বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকে আমার স্বামী তৈয়ব আলী মানসিকভাবে কিছুটা ভেঙে পড়েন। তিনি বাড়ির বাইরে বাগানে দীর্ঘসময় ধরে অবস্থান করেন।
গতরাতেও লুবনার পরিবারের ভয়ে ঘরছাড়া হয়ে বাড়ির পাশের বাগানে ঘুরতে দেখে স্থানীয় এক ব্যক্তি তাকে বুঝিয়ে বাড়িতে দিয়ে যায়। একটু পরে তিনি আবার বাহিরে চলে যান এবং আমিও ভয়ে ঘরে তালা লাগিয়ে অন্য বাড়িতে গিয়ে ঘুমাই।
বুধবার সকালে বাড়িতে গিয়ে আশেপাশে উনাকে খুঁজতে গিয়ে দেখি বাড়ির পাশের একটি ছোট আমগাছের ডালের সাথে গলায় গামছা পেছানো অবস্থায় আমার স্বামীর লাশ ঝুলে আছে। আমার চিৎকার শুনে লোকজন জড়ো হয়ে থানা পুলিশকে খবর দেয়।
পরে সেনাবাহিনী ও থানা পুলিশের দু’টি পৃথক টিম এসে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। আমরা এ মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করে দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিতের জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। মেয়ের মা মনোয়ারা বেগম জানান, তৈয়ব আলীর ছেলে জনি শনিবার সকালে আমার মেয়ে লুবনাকে নিয়ে পালিয়েছে।
এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। আত্মীয়-স্বজন ও পুলিশ নিয়ে মেয়ের খোঁজে তাদের বাড়িতে গিয়েছি, তবে কাউকে হুমকি ধমকি দেয়নি।
রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের রাশেদুল ইসলাম নামে এক যুবক জানান, মেয়ের পক্ষের লোকজন পুলিশ নিয়ে তৈয়ব আলীর পরিবারকে বিভিন্ন হুমকি ধমকি দেয়।
আজ সকালে বাড়ির পাশের আম গাছে রহস্যজনকভাবে তার লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। আমরা চাই, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে মূল রহস্য উম্মোচিত হোক।
মোহাম্মদ আলী নামের অপর এক ব্যক্তি জানান, গত পরশু মেয়ের চাচা সহ পুলিশ এসে তৈয়ব আলীর হাত ধরে টানাটানি করে।
উত্তেজিত পুলিশ তাকে চড়-থাপ্পর দেয়। গ্রামবাসীর প্রতিবাদে দু’দিনের সময় দিয়ে তারা চলে যায়। আজ তার এভাবে রহস্যজনক মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছে না। এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা তদন্ত করে বের করা উচিত।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার অভিযাসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘তৈয়ব আলী নামের একজনের লাশ উদ্ধার শেষে থানায় আনা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে।
তবে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে বিস্তারিত জানা যাবে’ অপরদিকে উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের কটপাড়া গ্রামে বসতঘর থেকে জহিরুল ইসলাম(৪৫) নামের এক যুবকের রহস্যজনক ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
সে ওই গ্রামের আবদুস সোবহানের ছেলে। তথটি নিশ্চিত করেন চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই সায়েদুর রহমান। এলাকাবাসী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জহিরুল ইসলাম দুই বিয়ে করেন।
প্রথম বউয়ের সাথে দাম্পত্য কলহের জেরে প্রথম তার নামে তিনটি মামলা করে।
মামলায় জহিরুল ইসলাম ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী। এ কারণে জহিরুল দীর্ঘদিন যাবৎ পলাতক। মাঝেমধ্যে সে বাড়িতে আসতো। প্রথম বউ তার(জহিরুল) ছবি দিয়ে পোস্টার ছাপিয়ে এলাকায় সাঁটায়; যাতে লেখা ‘একে ধরিয়ে দিন।’ এসব কারণে হতাশাগ্রস্ত হয়ে সে আত্মহত্যা করতে পারে বলে ধারণা করে এলাকাবাসী।
চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই সায়েদুর রহমান জানান, লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়।
ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছেনা। আবু বকর সুজন চৌদ্দগ্রাম