বুধবার , ২১শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধিঃ
একজন জোরপূর্বক ছাগলের মুখে পাইপ ঢুকিয়ে ধরে রাখেন, অন্যজন পাইপের মাথায় লাগানো বোতলে পানি ঢালেন। মুহূর্তের মধ্যে ছাগলের পেট ভরে যায়।
শুকনো ছাগল দেখতে হয়ে যায় মোটাতাজা। এমন অমানবিক ছিত্র দক্ষিণ কুমিল্লার গরু-ছাগলের বড় হাট চৌদ্দগ্রামের মিরশ্বানী বাজারের।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ক্রেতা বিক্রেতারা এই বাজারে ক্রয় বিক্রয়ের উদ্দ্যশ্যে আসেন।
কুরবানীর ঈদকে সামনে রেখে বর্তমানে আরো জমে উঠেছে বেচা-কেনা। স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের অভিযোগ অসৎ ব্যবসায়ীরা বাজারের পাশে নিয়ে ছাগলের পেটে পানি ভর্তি করেন।
প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা বলছেন ফুসফুসে পানি ঢুকে এই ছাগল তিন দিনের মধ্যে মারা যেতে পারে। প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়ানোর কারণে অভিযান চলাকালীন এক ঘন্টার মধ্যে একটি ছাগল মারা যায়।
বুধবার (৯ এপ্রিল) উপজেলা মিরশ্বানী গরু বাজারের পাশে দুপুরে বিভিন্ন যানবাহনে করে বিক্রির উদ্দেশ্যে আনা ছাগলের পেটে পানি ঢুকানোর সময় অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন।
ছাগলের পেটে জোরপূর্বক পানি ঢুকানোর সরঞ্জাম ও ৬৮টি ছাগলসহ আটক করা হয় ৯ জনকে।
এদের মধ্যে ৫ ছাগল ব্যবসায়ীকে এক মাসের ও ৪ সহযোগীকে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
আটককৃতরা হলো; ব্যপারী খান্নাপাড়া গ্রামের মোঃ ইসমাইল হোসেন, হেদায়েত উল্লাহ, চৌগুরীর নুরুল আমিন, মৌকরার মহিবুল্লাহ ও সদর দক্ষিণের মঙ্গলমুড়া গ্রামের আবদুল লতিফ ও শ্রমিক নাঙ্গলকোট উপজেলার চৌগুরী গ্রামের মোঃ মাসুদ, জাকির হোসেন, সবুজ, শাহিন।
ছাগল ক্রেতা চুপুয়া গ্রামের বাচ্চু মিয়া বলেন আমিও গত এক মাস পূর্বেই এই হাট থেকে ছাগল ক্রয় করে ঠকিয়েছি। এদের কঠিন বিচার হওয়া উচিত বোবা প্রাণীর সাথে অমানবিক আচরণ।
ছাগল বিক্রেতা কিশোর মিজান বলেন ছাগলের পেটে পানি ঢুকালে মোটাতাজা দেখা যায়, তাড়াতাড়ি বিক্রি হয়, বাজারে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় না।
ছাগল বাজারের ইজারাদার কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন মজুমদার বলেন, আমরা প্রত্যেক হাটে সকল ব্যাপারে কে আগে থেকেই নিষেধ করি কোন প্রকারে ছাগলের পেটে জোরপূর্বক পানি প্রবেশ না করার জন্য, তারা আমাদের কথা শুনে না।
উপজেলা প্রাণি সম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডাঃ আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, অসৎ উপায়ে বোবা প্রাণিগুলোকে জোরপূর্বক নল দিয়ে খাওয়ানোর কারণে ওজন বেড়ে যাচ্ছে। বেশি লাভের উদ্দেশ্যে প্রাণিগুলোর সাথে অমানবিক আচরণ করছে।
এটা প্রাণি সংরক্ষণ আইনে দন্ডনীয় অপরাধ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জামাল হোসেন বলেন, অবুঝ প্রাণি ছাগলের পেটে জোরপূর্বক পানি ঢুকানো হচ্ছে এমন তথ্য পেয়ে অভিযান চালিয়ে ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।