বুধবার , ১৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৪ঠা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
তাবারক হোসেন আজাদ, লক্ষ্মীপুর:
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে একটি কওমী মাদরাসার ছাত্র নিখোঁজের ১০ দিন পর সুপার নিখোঁজের ঘটনায় তোলপাড় চলছে। উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের চমকা বাজার এলাকায় অবস্থিত জামিআ আল্লামা যফর আহমদ উসমানী কওমী মাদরাসার শিক্ষক ও ছাত্র তাঁরা।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে রায়পুর থানায় সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করা হয়েছে। এর আগেও ওই মাদরাসার এক শিশুকে অপর দুই শিক্ষক পাষবিক নির্যাতন করে পালিয়ে যান। নিখোঁজ হাফেজ মুফতি তারেকুল ইসলাম (২৮) ওই মাদরাসার সুপার এবং খাসেরহাট জামে মসজিদের ইমাম।
তিনি চট্টগ্রামের লোহাগড়া উপজেলার সওদাগরপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলাম বাড়ির আবু তাহেরের ছেলে। ছাত্র আব্দুর রশিদ (১৬) উত্তর চরবংশী গ্রামের বেপারী বাড়ির সুফিয়ান রহমানের ছেলে ও ওই মাদরাসার কিতাব বিভাগের ছাত্র। আব্দুর রশিদের মা মাসুদা বেগম বলেন, আমার ছেলে গত ১৬ জুলাই সন্ধ্যার পর মাদরাসার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়।
পরদিন বিকেলে খোঁজ নিলে তাকে মাদরাসায় পাওয়া যায়নি। ওই দিন সে মাদরাসায় গিয়েছিল কিনা তা কেউ নিশ্চিত করে জানাতেও পারছেনা। তাকে কোথাও খুঁজে না পাওয়ায় আমরা চিন্তিত। এ ঘটনায় গত সোমবার বিকেলে আমি থানায় জিডি করেছি।
হাফেজ মুফতি তারেকুল ইসলামের ভাই ও ওই মাদরাসার অপর শিক্ষক মুহাম্মদ তানবীরুল ইসলাম বলেন, গত সোমবার ভোরবেলা ফজরের নামাজের পর থেকে আমার ভাইকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি ভোরে বেরিয়ে গিয়ে নামাজ পড়ালেও আর মাদরাসায় ফিরে আসেননি। গ্রামের বাড়িতে বা স্বজনদের কাছেও তাঁর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় আমি মঙ্গলবার দুপুরে রায়পুর থানায় জিডি করেছি।
উল্লেখ্য, ঈদুল আযহার আগে ওই মাদরাসার ১২ বছর বয়সী এক ছাত্রকে মনিরুল ইসলাম নামের এক শিক্ষক পাষবিক (বলৎকার) নির্যাতন করেন। ওই সময় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসি মাদরাসা ঘেরাও করলে ওই শিক্ষকও পালিয়ে যান। একই ছাত্রকে ওই ঘটনার প্রায় ৩ মাস আগে মনির হোসেন নামের অপর শিক্ষক পাষবিক নির্যাতন করে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।
একটির পর একটি ঘটনায় মাদরাসাটি এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা স্কুল শিক্ষক মুরাদ হোসেন বলেন, মাদরাসার সুনাম রক্ষার্থে পূর্বের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়নি। তাঁরা পালিয়ে যাওয়ায় স্থানীয়ভাবেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়নি।
এ ঘটনার রেশ না কাটতেই আবার শিক্ষক ও ছাত্র নিখোঁজের ঘটনায় আমরা চিন্তিত। রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, ওই ঘটনায় থানায় পৃথক দুটি জিডি করা হয়েছে। নিখোঁজদের সন্ধানে পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে।