শুক্রবার , ২৪শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ১০ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
লাকসাম প্রতিনিধিঃ
টানা পাঁচ দিনের ভারি বর্ষণে লাকসামে অধিকাংশ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি। পাঁচ দিনের টানা ভারি বর্ষণে এবং উজানের পানি নেমে আসায় লাকসাম উপজেলা এবং পৌরসভার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ভারি বর্ষণের ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বহু পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে অনেক কাঁচা-পাকা রাস্তাঘাট, শত শত পুকুর ও মাছের ঘের।
ফলে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত মাছ চাষিরা। লাখ লাখ টাকার লোকসান হওয়ায় এখন তাদের মাথায় হাত।
এদিকে কয়েক দিনে টানা ভারি বর্ষণে বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠও পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছোট ছোট শিশু শিক্ষার্থীকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা।
উপজেলা প্রশাসন কয়েকটি বিদ্যালয়কে আশ্রয়কেন্দ্র হিসাবে ঘোষণা করেছে।
উপজেলার গোবিন্দপুর, উত্তরদা, কান্দিরপাড় এবং মুদাফরগঞ্জ উত্তর মুদাফরগঞ্জ দক্ষিণ, বাকই দক্ষিণ, কান্দিরপাড়, লাকসাম পুর্ব ও আজগরা ইউনিয়নের কমপক্ষে অধিকাংশ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ওই সব গ্রামের মাছ চাষিদের পুকুর ও মাছের ঘেরগুলো ভেসে যাওয়ায় লাখ লাখ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
এ ছাড়া উপজেলার বাকই (দক্ষিণ), মুদাফরগঞ্জ (উত্তর), লাকসাম (পূর্ব), আজগরা ইউনিয়নের কৃষকদের বহু বীজতলা তলিয়ে গেছে। ফলে কৃষকেরা দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।
অন্যদিকে লাকসাম পৌরসভার বহু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। বিশেষ করে পশ্চিমগাঁও,
গাজিমুড়া, ধামৈচা, সাতবাড়িয়া, উত্তরকূল, গুন্তি, গোপালপুর, কুন্দ্রা, বাইনচাটিয়া, বিনয়ই, নশরতপুর, মিশ্রী, শ্রীপু, আমুদা, পশ্চিমগাঁও, বাতাখালীসহ কয়েকটি এলাকায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতার ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে ওই সব এলাকার মানুষজন।
উপজেলা প্রশাসন নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি কলেজ, দৌলতগঞ্জ গাজীমুড়া কামিল মাদ্রাসা, নওয়াব ফয়জুন্নেছা ও বদরুন্নেসা যুক্ত উচ্চ বিদ্যালয়, লাকসাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, লাকসাম পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দৌলতগঞ্জ সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আল আমিন ইন্সটিটিউটকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে।
এছাড়াও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্রে শোকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
লাকসাম উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মাজহারুল ইসলাম জানান, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পরিদর্শন এবং ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়ার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।
এ ব্যাপারে লাকসাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী মুঠোফোনে জানান, গত কয়েক দিনে টানা ভারি বর্ষণে উপজেলা পরিষদ চত্বরেও পানি উঠে গেছে।
তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।
পরর্তীতে বরাদ্দ পাওয়া সাপেক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।