বুধবার , ২১শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আরিফুর রহমান, কক্সবাজারঃ
কক্সবাজারের টেকনাফে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে শীর্ষ রোহিঙ্গা ডাকাত দল হাসেম বাহিনীর প্রধান নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় র্যাবের দুইজন সদস্য আহত হয়েছেন। নিহতের নাম হাসিমুল্লাহ (৩৩)। সে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমোরা ২৭নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সি ব্লকের বশির আহমদের ছেলে।
র্যাবের দাবি, নিহত ব্যক্তি একজন শীর্ষ রোহিঙ্গা ডাকাত। তার বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় অপহরণ, মুক্তি বাণিজ্য, ডাকাতি, ইয়াবা লুটপাটের একাধিক মামলা রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি একনলা লম্বা বন্দুক, ৮ রাউন্ড গুলি ও একটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার রাত দেড় টার দিকে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়ার ১৪ নম্বর সেতুর এলাকায় বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাটি ঘটে ।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব-১৫ ) এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ। তিনি বলেন, উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া ১৪ নম্বর সেতু এলাকায় একদল ডাকাতের অবস্থান করার খবর পায় র্যাব। ঐ সংবাদের ভিত্তিতে টেকনাফ ক্যাম্পের একদল সদস্য টেকনাফ-কক্সবাজার আঞ্চলিক সড়কের ১৪ নম্বর সেতু এলাকায় পৌঁছালে ডাকাত দলের সদস্যরা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। এতে র্যাবের দুজন সদস্য সমরূপ চক্রবর্তী (২৭) ও মোঃ মাহবুবুর রহমান (২৮) আহত হয়।
র্যাব সদস্যরা নিজেদের জানমাল রক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোঁড়ে। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। গোলাগুলির এক পর্যায়ে ডাকাতদলের কয়েকজন সদস্য গুলিবর্ষণ করতে করতে গহীন পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যায়।
র্যাব পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালালে সেখান থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি একনলা লম্বা বন্দুক, ৮ রাউন্ড গুলি ও একটি ম্যাগাজিনসহ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আহত এক রোহিঙ্গা ডাকাতসহ র্যাবের দুইজনকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক একজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আহনাফ চৌধুরী বলেন, রাতে র্যাব সদস্যরা তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এরমধ্যে একজন সাধারণ ব্যক্তি ও অপর দুজন র্যাবের সদস্য। সাধারণ পোশাকে থাকা ব্যক্তির শরীরে পাঁচটি গুলির চিহ্ন দেখা গেছে। হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। পোষাকধারী দুজন সদস্যকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় রোহিঙ্গারা জানায়, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসার পর হাসিমুল্লাহ একটি সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলে। ওই বাহিনীর শীর্ষ রোহিঙ্গা ডাকাত গ্রুপের প্রধান হাসিমুল্লাহ। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশাপাশি আশপাশের এলাকায় অপহরণ,মুক্তি বাণিজ্য,ডাকাতিসহ ইয়াবা লুটপাটের ঘটনায় আলোচিত হয়ে উঠে। তার মৃত্যুর খবর শুনে অনেকের স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব-১৫ ) উপ অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ তানভীর হাসান বলেন, নিহত রোহিঙ্গা ডাকাতের লাশটি থানা পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ লাশটি কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।