বুধবার , ২১শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি :
রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বন্দর নগরী চট্টগ্রামের যাতায়াত সহজ করতে রাতে বিরতিহীন ট্রেন চালুর দাবি দীর্ঘদিনের। যাত্রীদের সেই দাবি এবার পূরণ হতে চলেছে। রাতে এক জোড়া বিরতিহীন ট্রেন চালুর সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে রেলওয়ে। নির্ধারণ করা হয়েছে টাইম-টেবিল। সুবর্ণ ও সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের রেক (যাত্রীবাহী কোচ, পাওয়ার কার, খাবারগাড়িসহ ১৪ থেকে ১৮ বগির সমন্বয়) দিয়ে চালানো হবে নতুন এই সার্ভিস।
জানা গেছে, সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন রাত সাড়ে ১১টায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যাবে নতুন বিরতিহীন ট্রেনটি; ভোর সাড়ে ৪টায় গন্তব্যে পৌঁছবে। চট্টগ্রাম থেকে রওনা দিয়ে ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনের আগে কোথাও থামবে না; একইভাবে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে সরাসরি চট্টগ্রাম স্টেশনে পৌঁছবে। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পরিবহন বিভাগ থেকে সময় নির্ধারণসহ ট্রেনটি পরিচালনার প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। রেল ভবন থেকে চূড়ান্ত করে নির্দেশনা জারি করা হবে। রেল কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে বর্তমানে দুটি ননস্টপ ট্রেন চালু রয়েছে। ১৯৯৮ সালে সুবর্ণ এবং ২০১৬ সালে চালু হয় সোনার বাংলা। ঢাকা থেকে সোনার বাংলা সকাল ৭টায় এবং সুবর্ণ এক্সপ্রেস বিকাল সাড়ে ৪টায় ছাড়ে।
সোনার বাংলা দুপুর ১২টা এবং সুবর্ণ রাত সাড়ে ৯টায় চট্টগ্রাম পৌঁছে। একইভাবে সকাল ৭টায় চট্টগ্রাম থেকে সুবর্ণ ও বিকাল পাঁচটায় সোনার বাংলা ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সুবর্ণ দুপুর ১২টা এবং সোনার বাংলা রাত ১০টায় ঢাকা পৌঁছে। এই রেকগুলো ঢাকা-চট্টগ্রামে শেডে পরবর্তী যাত্রার অপেক্ষায় থাকে। এই রেকগুলোকে অলস বসিয়ে না রেখে এখন নতুন ননস্টপ সার্ভিস চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। সে অনুযায়ী পূর্বাঞ্চলের পরিবহন বিভাগ থেকে প্রস্তাবনা পাঠানো হচ্ছে। সূত্র জানায়, সোনার বাংলা ও সুবর্ণ এক্সপ্রেসে মূলত অভিজাত শ্রেণির যাত্রীরা যাতায়াত করে। বিশেষ করে জরুরি প্রয়োজনে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজে যায়। কিন্তু সুবর্ণ ট্রেনে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করতে পারে না; আবার সোনার বাংলায় গেলে রাতযাপন করতে হয়। ফলে যাত্রীরা দীর্ঘদিন ধরে রাতে একটি বিরতিহীন ট্রেন চালুর দাবি জানিয়ে আসছিল।
বিষয়টি রেলভবনে জানানো হলেও কোচ ও ইঞ্জিন সংকটে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। বিগত কয়েক বছরে বিপুলসংখ্যক কোচ সংগ্রহ করা হয়েছে। বর্তমানেও একাধিক প্রকল্প চলমান। ইঞ্জিন ক্রয়ের প্রকল্পও চলমান আছে। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বাণিজ্যিক বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, করোনা-পরবর্তী বিশেষ করে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর পরিবহন খরচ বাড়ায় ট্রেনে যাত্রীদের চাহিদা বেড়েছে। ফলে নতুন ট্রেন পরিচালনায় রাজস্ব আয়ও বাড়বে। সামগ্রিক বিষয় বিবেচনায় ট্রেন বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিবহন) সরদার শাহাদাত আলী বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে সুবর্ণ ও সোনার বাংলা ট্রেনের আদলে রাতে এক জোড়া বিরতিহীন ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। পূর্বাঞ্চলের পরিবহন বিভাগ থেকে প্রস্তাবনা পাঠানোর পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।