সোমবার , ২০শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
গাজীপুর প্রতিনিধিঃ
গাজীপুর শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই তুরাগ নদীতে নাব্যতা সংকটের কারণে গাজীপুরের কড্ডা-আশুলিয়া নৌ-রুটে টানা ৫ দিন ধরে মালবাহী নৌযান, বাল্কহেড চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ফলে এ নৌপথটি ব্যবহার করে ব্যবসা বাণিজ্য করা ব্যবসায়ী ও মালবাহী নৌযান, বাল্কহেড সমূহ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানা গেছে।
নৌ পথটি বন্ধের আশঙ্কা প্রকাশ করে দৈনিক আলোকিত সকালসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ, ইজারাদার ও এ পথটি ব্যবহার করা যাত্রীরা উদ্বেগ জানালেও ড্রেজিংয়ের কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহন না করায় অবশেষে ৫দিন ধরে বাল্কহেড ও মালবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে আছে।
রুটটি ব্যবহার করে পণ্য আনা-নেওয়া করা তমাল নামের এক ব্যবসায়ী বলেন,’ঢাকা থেকে পণ্য আনা-নেওয়ার অন্যতম সহজ ও স্বল্প খরচের এ রুটটি এখন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পরেছে।
নাব্যতা সংকটের কারণে পণ্যবাহী কোন নৌযান এ রুট দিয়ে আসতে চায় না।রিস্ক নিয়ে দু-একজন নৌচালক যদিও রাজি হয়,কিন্তু তারা ২-৩ গুন ভাড়া বেশি চায়।
ফলে এ রুটে আর আগেরমত ব্যবহার হয় না।এতে বিকল্প পথ ব্যবহার করায় খরচ বাড়ছে।
‘ সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে,নাব্যতা সংকটে বড় লঞ্চ না চলায় ছোট ছোট নৌকায় যাত্রীরা গাদাগাদি করে ঝুঁকি নিয়ে ছুটে চলছেন নিজ নিজ গন্তব্যে। এসব নৌকায় নেই ছাউনি, নেই নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা। স্থান সংকুলান না হওয়ায় অনেকে পরবর্তী নৌকার জন্য নদীতীরে অপেক্ষা করছেন।
এছাড়া নদীতে মালবাহী নৌযান,বাল্কহেড নেই বললেই চলে।কারণ জিজ্ঞাসা করলে কাশিমপুরের ধনঞ্জয়খালীর রহিম উদ্দিন জানান,পানির স্তর নিচ নেমে যাওয়ায় জায়গায় জায়গায় চরের মত মাটি দেখা যাচ্ছে। মাঝে মধ্যেই বাল্কহেড আটকে থাকছে দিনের পর দিন।আজ ৫ দিন ধরে কোন বাল্কহেড বা পণ্য সামগ্রী নিয়ে চলাচল করতে পারছে না।
আল ইত্তেহাদ-২ নামের এক বাল্কহেডের মাষ্টার বলেন,আজ ৫ দিন ধরে কাশিমপুরের ধনঞ্জয়খালী-জেলেপাড়ার মাঝখানে তুরাগের উপর আটকে আছি।ড্রেজিং না করাতে আমাদের মত এমন দূর্ভোগে আগেও অনেকে আটকে ছিল দিনের পর দিন।
এভাবে আটকে থাকলে আমাদের মত শ্রমিকদের পরিবার চালানো অনেক কষ্টকর হয়ে যায়।কেননা বাল্কহেড চললেই আমরা বেতন পাই। নাব্যতা সংকটে সেই বাল্কহেড আটকে অনেক দুশ্চিন্তায় আছি।
নৌপথটি ঘুরে দেখা যায়, তুরাগের আশুলিয়া বাজার,তৈয়বপুর, নর্থ টাউন, কাশিমপুরের ধনঞ্জয়খালী, জেলেপাড়া, মাইমুন টেক্সটাইল এলাকায় নাব্যতা কমেই হ্রাস পেয়ে ভারী নৌযান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পরেছে। দীর্ঘ দিনের এ সমস্যা সঠিকভাবে নিয়মিত ড্রেজিং না করার ফলের আরও তীব্র হচ্ছে।
এদিকে এই নৌপথটির ইজারাদার মৃধা জুয়েল রানা জানান,’বিআইডব্লিটিএ কে বারবার জানানোর পরও এ নৌরুটটিতে কাংখিত ড্রেজিং না করায় এখন মাঝেমধ্যেই বাল্কহেড আটকে যাচ্ছে।
গত ৫ দিন ধরে রুটটি একপ্রকার বন্ধ হয়ে আছে।সরকারের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকায় ইজারা নিয়ে এখন পুরো লসের মধ্যে আছি।
আল্লাহ জানেন কত বছর লাগবে আমার লগ্নি করা মূল টাকা ফেরত পেতে। এ নৌরুটটি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বার বার খবর প্রকাশ হলেও কোন এক অজানা কারণে এ রুটের ড্রেজিংয়ের কোন নাম গন্ধ নেই।’