বুধবার , ১৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৪ঠা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
তাবারক হোসেন আজাদ, লক্ষ্মীপুর:
গত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ্য লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে দুইটিসহ জেলায় ২৪টি কমিউনিটি ক্লিনিক সংস্কার কাজ করছে স্বাস্থ্য প্রকৌশলী বিভাগ। এই কাজ কুমিল্লার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিরাজ এন্টারপ্রাইজ সাব কন্ট্রাক দিয়ে তাড়াহুড়া করে নিম্নমানের কংকর ব্যবহার করে বৃষ্টির মধ্যেই সংস্কার কাজ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (২০ মে) বিকালে রায়পুরের বামনী ইউপির কবিরহাট এলাকায় সরেজমিন এচিত্র দেখা যায়।
এছাড়াও দুই দিন পর উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের চরকাছিয়া কমিউনিটি ক্লিনিক ভবনের সংস্কার কাজও শুরু করা হবে।
এসময় বিদ্যুতের ব্যাবস্থা থাকলেও লাইনটিও অকেজো হওয়ায় মোবাইলের আলো দিয়ে কাজ করছেন ক্লিনিক সিএইচসিপি নাসিমা।।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রায়পুরে বামনী ইউপির ১নাম্বার ওয়ার্ডের প্রায় ৬ হাজার গ্রামবাসীর জন্য ২০ বছর আগে কবিরহাট এলাকায় স্বাস্থ্যক্লিনিকটি নির্মাণ করা হয়। কয়েক বছর পরই ওই ক্লিনিকের ভবনের পলেস্তারা খসে পড়ে ও ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে স্যাঁত স্যাঁতে পরিবেশ সৃষ্টি হলে ক্লিনিকটি পরিত্যাক্ত ঘোষনা করে ছিলেন স্বাস্থ্য বিভাগ।
মঙ্গলবার বৃষ্টির মধ্যেই পরিত্যাক্ত্য ও ঝুকিপুর্ন ওই ক্লিনিকে শ্রমিকরা একদিকে কাজ করছেন, পরক্ষণে ঢালাই উঠে যাচ্ছে। তাঁদের মতে, দেওয়া হচ্ছে না। তবে সাব- ঠিকাদার সাদ্দাম এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, সিভিল সার্জন অফিসের প্রকৌশলীদের চাহিদামতোই কাজ করা হচ্ছে।
ওই ক্লিনিকের সামনে মাটিতে থাকা ময়লাযুক্ত বালু ও ইটের কংকর পৃথক রাখা রয়েছে। তা ভবনের ছাদে নিয়ে মিশ্রণ করা হচ্ছে। কিন্তু এ সংস্কারকাজ পর্যবেক্ষণের জন্য সেখানে কোনো প্রকৌশলী উপস্থিত ছিলেন না। তখন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। এর মধ্যেই কাজ হচ্ছে।
এসময় এই প্রতিবেদকসহ সাংবাদিককে দেখেই ঠিকাদার কাজ করা বন্ধ করে দেন।
বৃষ্টির সময় কেন কাজ করছেন এবং আনিয়ম কেন? জানতে চাইলে মুল ঠিকাদার আবদুর রহমান আনাস নামের ঠিকাদার বলেন, ‘প্রকৌশলী যেভাবে কাজ করতে বলেছেন, আমরা সেভাবেই কাজ করি।’ অনিয়ম হচ্ছেনা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুইজন ঠিকাদার বলেন, স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ থেকে যেভাবে বলে দিছে, তারা সেভাবেই কাজ করছেন। খুবই নিম্নমানের কাজ। এখানে দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী সাহাবুদ্দিন কোথায়, জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারাা আসেন না।
এবিষয়ে কবিরহাট কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি নাসিমা আক্তার বলেন, ১৫ বছর ধরে ক্লিনিকটি পরিত্যাক্ত ও ঝুকিপুর্ণ ঘোষিত। ভবনে ফাটল, পলেস্তারা খসে পড়ছে ও ছাদ চুইয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে স্যাঁত স্যাঁতে পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় চরম আতংক নিয়ে স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছি। এখানে নতুন ভবন না করে বৃষ্টির মধ্যে সংস্কারের কাজ করছে ঠিকাদার। কোন প্রকৌশলী ও কর্মকর্তা এখনও আসেনি। সংস্কার কাজের কোন কাগজপত্দেয়া হচ্ছেনা।
এবিষয়ে লক্ষ্মীপুরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সাহাবুদ্দিন হোসেন বলেন, মে মাসের মধ্যে সব কাজ শেষ করতে হবে।
লক্ষ্মীপুর জেলায় ২৪টি কমিউনিটি ক্লিনিকের সংস্কারে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা করে। কাজের মান সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, ‘কাজ শুরু করার আগে ঠিকাদার আমাদেরকে জানাবেন। বৃষ্টির মধ্যে রায়পুরে কাজ করা হচ্ছে, তা তো আমরা জানিনা। আপনার (সাংবাদিক) মাধ্যমে জানতে পারলাম। লিখিত জবাব চাওয়া হবে।