সোমবার , ২০শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সৌরভ মাহমুদ হারুন, ব্রাহ্মণপাড়াঃ
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় রোপা আমন ধান পাকতে শুরু করেছে। কিছু কিছু কৃষক পাকা ধান কাটতে শুরু করেছেন। এরই মধ্যে আমন চাষির স্বপ্নে হানা দিয়েছে কারেন্ট পোকা। এতে ঝলসে গেছে যতনে ফলানো রোপা আমনধান।
কীটনাশক ব্যবহার করেও কারেন্ট পোকা থেকে তেমন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না, জানান ভুক্তভোগী চাষিরা।
এ নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন আমন চাষিরা। তবে পোকা দমনে স্থানীয় কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে আমন চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
সরেজমিনে উপজেলার সদর ইউনিয়নের দীর্ঘভূমি ও দুলালপুর ইউনিয়নের বেজুরা এলাকার আমন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, অনেক ধান ক্ষেতে কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এতে এসব ক্ষেতের পাকতে যাওয়া ধান ঝলসে গেছে।
স্থানীয় কৃষি অফিসের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কীটনাশক ব্যবহার করেও তেমন উপকৃত হচ্ছেন না চাষিরা। এ নিয়ে ওই এলাকার আমন চাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের দীর্ঘভূমি এলাকার আমনচাষি হিমন মিয়া জানান, তিনি চলতি মৌসুমে ৩৫ শতক জমিতে আমনধান চাষ করেছেন।
এ বছর ফলনও ভালো হয়েছে। ধানও পাকতে শুরু করেছে। তবে কারেন্ট পোকার আক্রমণে অধিকাংশ ধান নষ্ট হয়ে গেছে। গত দুদিনে প্রায় ১৮ শতক জমির ধান কেটেছেন তিনি। কারেন্ট পোকার কারণে অধিকাংশ ধান চিটা হয়ে গেছে।
একই অবস্থা ওই এলাকার আমনচাষি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, মুমিনুল ইসলাম, মো. শাহিন মিয়া, ইউনুস মিয়া ও আবুল কালামের। তারা কম-বেশি জমিতে রোপা আমন চাষ করেছেন বলে জানান। কিন্তু হঠাৎ করে আমন ঘরে তুলবার আগে কারেন্ট পোকার এমন আক্রমণে নষ্ট হয়ে গেছে তাদের আমনধান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী পোকা দমনের জন্য প্লেনাম, তড়িত ও মিমসিনসহ বিভিন্ন প্রকার কীটনাশক ব্যবহার করেও উল্লেখযোগ্য কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না তারা।
উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের বেজুরা এলাকার আমনচাষি সিদ্দিকুর রহমান জানান, আমন মৌসুমে তিনি ৫৫ শতক জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ করেছেন। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে।
কিন্তু এরইমধ্যে ধানে কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এতে আমনধান ঝলসে গেছে। ফলে আশার গুড়ে বালি পড়েছে তার।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মুজিবুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, উপজেলার কিছু কিছু রোপা আমন ক্ষেতে কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে প্রান্তিক কৃষকদের মধ্যে আমরা পোকা দমনে নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। আক্রান্ত জমিতে কীটনাশক এমনভাবে ছিটাতে হবে যাতে করে কীটনাশক ধান গাছের গোড়ায় পৌঁছে। কারণ কারেন্ট পোকা ধান গাছের গোড়ায় থাকে। কারেন্ট পোকা দমনে উপজেলা কৃষি অফিস তৎপর রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মাসুদ রানা যুগান্তরকে বলেন, উপজেলার কিছু কিছু ধান ক্ষেতে কারেন্ট পোকা আক্রমণ করেছে।
প্রতি বছরই কারেন্ট পোকা ধান ক্ষেতে আক্রমণ করে থাকে, তবে এ বছর বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ার কারণে জমিতে এ পোকার আক্রমণ অন্যান্য বছরের তুলনায় একটু বেশি। আমরা কারেন্ট পোকা দমনে কৃষকদের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।
আগামী আট দশদিনের মধ্যে আমনধান কাটা হয়ে যাবে। এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। এতে কৃষকরাও খুশি।