শুক্রবার , ২৪শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ১০ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সৌরভ মাহমুদ হারুন, ব্রাহ্মণপাড়াঃ
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় মিগজাউম প্রভাবে অসময়ের গুঁড়ি গুঁড়ি ও মাঝারি বৃষ্টিতে অধিকাংশ ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে আলু চাষিদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে যেসব জমিতে পানি জমেছে ঐ সব জমির আলু নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় কৃষক।
এছাড়াও শীতকালীন সবজি ও বোরোর বীজতলারও ক্ষতির আশঙ্কায় কৃষক।
জানা গেছে, গতকাল বুধবার সন্ধ্যারাত থেকেই এ উপজেলায় থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি ও মাঝারি বৃষ্টি শুরু হয়।
পরদিন বৃহস্পতিবার সারাদিনে বিরামহীন গুঁড়ি গুঁড়ি ও মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে। আজ শুক্রবার বৃষ্টি না থাকলেও আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। এতে শীতকালীন আনাজের ক্ষতির আশঙ্কায় চাষিরা।
এছাড়াও জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা।
সরেজমিনে গিয়ে উপজেলা সদরসহ উপজেলার দুলালপুর, সাহেবাবাদ, চান্দলা, সিদলাই ও মাধবপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠ ও জনপদ ঘুরে দেখা গেছে, ঘূর্ণিঝড় মিগজউমের প্রভাবে বর্ষিত গুঁড়ি গুঁড়ি ও মাঝারি বৃষ্টিপাতে ফসলি মাঠের শীতকালীন সবজির ক্ষতির আশঙ্কায় চাষিরা।
টানা বৃষ্টিতে মাঠে মাঠে ফসলি ক্ষেতে পানি জমে গেছে। জমে যাওয়া বৃষ্টিজল নিষ্কাশনের কাজে উঠেপড়ে লেগেছেন সংশ্লিষ্ট চাষিরা। অসময়ের বৃষ্টিতে আলুসহ নানারকম সবজি, এখনও সংগ্রহ করা হয়নি আমনধান ও বোরোধানের বীজতলার ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছেনব এই উপজেলার প্রান্তিক চাষিরা।
উপজেলার মহালক্ষীপাড়া এলাকার চাষি আবু কাউসার বলেন, ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের কারণে গুঁড়ি গুঁড়ি মাঝারি বৃষ্টির ফলে সৃষ্ট বৈরী আবহাওয়ায় আমাদের সবজি ক্ষেতের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছি। জমিতে জমে যাওয়া বৃষ্টির পানি সরানোর কাজে আমরা এখন ব্যস্ত। জানি না শেষ পর্যন্ত শেষ রক্ষা করতে পারি কি না।
উপজেলার দুলালপুর এলাকার জহিরুল ইসলাম বলেন, গত তিনদিন আগে ২২ শতক জমিতে বোরোধান আবাদের লক্ষ্যে বীজতলা তৈরি করে বীজ ফেলেছিলাম, ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের কারণে সৃষ্ট বৃষ্টিতে বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। জমি থেকে জমা পানি সরানোর কাজ করছি।
উপজেলার অলুয়া এলাকার আলুচাষি মমিনুল ইসলাম জানান, কোদাল দিয়ে জমির আইল কেটে পানি সরানোর কাজ করছেন তিনি। তারপরও আবাদ করা আলুবীজ রক্ষা করতে পারবো কি না, আছেন এই অনিশ্চয়তায়। হঠাৎ করে আসা এই প্রতিকূলতার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না তিনিসহ অন্যান্য চাষিরা।
কুমিল্লা জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, মিগজাউমের প্রভাবে এ জেলায় আবাদ করা আড়াই হাজার হেক্টর আলুর ৫ শতাংশ ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে যেসব জমিতে বৃষ্টির পানি জমেছে সেসব জমি থেকে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
এছাড়াও শীতকালীন সবজির ব্যাপারেও একই পরামর্শ পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বোরোর বীজতলা তৈরি করা হয়েছে এমন জমিতেও যদি পানি জমে থাকে সে ক্ষেত্রেও ওইসব জমি থেকে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের করতে হবে। উপজেলা ও জেলা কৃষি বিভাগ নানা পরামর্শ নিয়ে কৃষকদের পাশে আছে।