আব্দুস সালাম নামে এক বিদেশ ফেরত ব্যক্তিকে গলা কেটে খুনের দায়ে আপন ভাই মো. আজম কে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে সালামের মা ফরিদা বেগম ও বোন কামরুন নাহারকে যাবজ্জীবন এবং দণ্ডিত তিন আসামির প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মামলার কার্যক্রম চলাকালে অপর আসামি সালামের বাবা আব্দুর রাজ্জাক মৃত্যুবরণ করায় তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ অশোক কুমার দত্তের আদালত এই রায় দেন বলে গণমাধ্যম কে নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট লোকমান হোসেন চৌধুরী।
লোকমান হোসেন চৌধুরী বলেন, ২০০৯ সালের ১৯ অক্টোবর বিদেশ থেকে দেশে ফেরার এক সপ্তাহের মাথায় সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে আব্দুস সালামকে নিজ বাড়িতে তার বাবা-মা, ভাই-বোন মিলে গলাকেটে খুন করে।
এ ঘটনায় সালামের স্ত্রী পারভীন আক্তার বাদী হয়ে বোয়ালখালী থানায় আব্দুর রাজ্জাক, আজম, ফরিদা ও কামরুন নাহারকে আসামি করে মামলা করেন।
পুলিশ তদন্ত করে ২০১০ সালের ৯ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। একই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলার ২১ জন সাক্ষীর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে অপরাধীদের অপরাধ প্রমাণে সক্ষম হয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দণ্ডিত আজম ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন। অপর দুই দণ্ডিত আসামি ফরিদা ও কামরুন নাহার যুক্তিতর্ক শুনানি পর্যন্ত নিয়মিত আদালতে হাজির থাকলেও রায় ঘোষণার সময় অনুপস্থিত ছিলেন।
মামলার এজাহার বলা হয়েছে, ঘটনার দিন সকালে আব্দুস সালাম তার বাড়ির সামনে গোয়ালঘর মেরামত করার সময় ভাই আজম, বাবা রাজ্জাক, মা ফরিদা ও বোন কামরুন নাহার বাধা দেয়। দুপুরে সালাম তার স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে ভাত খাওয়ার সময় আসামিরা তার ঘরে ঢুকে তাকে মাটিতে ফেলে দেয়। বাবা রাজ্জাক মাথা চেপে ধরেন, ফরিদা ও কামরুন নাহার হাত-পা চেপে ধরেন আর আজম ছুরি দিয়ে কণ্ঠনালীতে আঘাত করেন।
জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর-পর আজম ও তার বাবা রাজ্জাক পালিয়ে যান। কিন্তু স্থানীয় লোকজন ফরিদা ও কামরুন নাহারকে আটক করে পুলিশে দেন। মামলা চলাকালে তারা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে আদালতে নিয়মিত হাজিরাও দিয়েছেন।
সর্বশেষ ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর মা-মেয়ে আদালতে উপস্থিত ছিলেন বলেও জানা গেছে। তবে রায়ে সাজা হওয়ার বিষয়টি টের পেয়ে রায় ঘোষণার সময় তারা আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন।