বুধবার , ২১শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মামুন নজরুল, মীরসরাইঃ
চট্টগ্রাম মীরসরাইয়ে “স্মৃতির টানে প্রিয় প্রাঙ্গণে এসো মিলি প্রাণের বন্ধনে” এই স্লোগানে বর্ণাঢ্য আয়োজনে মধ্য দিয়ে উদযাপন হলো ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আবুতোরাব বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ২০০২ ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নিয়ে ঈদ পুনর্মিলনী ও মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২ এপ্রিল) আবু তোরাব বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে ব্যাচ ২০০২ প্রাক্তন ছাত্ররা সাবেক ও বর্তমান শিক্ষকদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়।
আবুতোরাব বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ২০০২ ব্যাচের প্রাক্তন ছাত্র প্রফেসর রাজু বড়ুয়া ও সাহিদা ইয়াছমিন ভুঁইয়ার যৌথ সঞ্চালনায় এবং উদযাপন পরিষদের আহবায়ক ইমাম হোসেন ইমনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন অত্র বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মর্জিনা আক্তার।
প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন অত্র বিদ্যালয়ে শিক্ষক বাবু সমিরণ বড়ুয়া।
পুনর্মিলনী ও বন্ধুদের মিলনমেলা উদ্বোধন করেন উদযাপন পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক রেয়াজুল ইসলাম ইমন ভুঁইয়া।
বিশেষ মেহমান ও সেইসময়কার স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের সাবেক ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা রবিউল হোসেন নিজামী, সাবেক শিক্ষক মমিনুল হক বিএসসি ,সাবেক শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন, বর্তমান শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান।
ঐতিহ্যবাহী আবুতোরাব উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০০২ ব্যাচের পুনর্মিলনী উৎসবে সাবেক শিক্ষার্থীরা মেতে উঠেছিলেন আনন্দে, যেন খুঁজে পেয়ে ছিলেন নিজেদের শৈশব। সবাইকে আবার একসঙ্গে পেয়ে যেন কর্মজীবনের সব ক্লান্তি দূর হয়ে গিয়েছিল প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের। পুরোনো বন্ধুদের নতুন করে পেয়ে ক্যামেরাবন্দি করে রাখেন তারা।
একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময় ও কোলাকুলির মাধ্যমে বন্ধুত্বের নতুন বন্ধন তৈরি করেন।
প্রাক্তন শিক্ষার্থী ২০০২ ব্যাচের সাহিদা ইয়াছমিন বলেন, আমরা শৈশব-কৈশোরের খোঁজে এখানে ছুটে এসেছি, স্বপ্নের দরবারে, স্মৃতির আঙিনায়।
বহুদিন পর স্কুলবন্ধুদের একত্রিত করতে পারলাম।
নানা ব্যস্ততায় অনেকের সঙ্গেই যোগাযোগ ছিল না। ঈদকে উপলক্ষ করে বন্ধুদের একত্রিত করার উদ্যোগ নিই, আর সেই ভাবনা বাস্তবায়ন করতেই এই মিলনমেলা। সত্যিই দুর্দান্ত একটা দিন কাটিয়েছি।’
২০০২ ব্যাচের ছাত্র রেয়াজুল ইসলাম ইমন স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্যে বলেন, এই মিলন মেলা ঈদের আনন্দকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। যারা আজ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন সবাইকে শুভেচ্ছা এবং ঈদ মোবারক। এক সময় আমরা একসঙ্গে পড়াশোনা করলেও, জীবিকার তাগিদে অনেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছি। কেউ রাজধানী ঢাকা, কেউ চট্টগ্রাম- কেউবা আরও দূরদূরান্তের জেলায়।
জীবনের এমনই নিয়ম। এখন হয়তো কালেভদ্রে সেসব বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়। ফলে আমরা চেয়ে ছিলাম এবারের ঈদের ছুটিতে সবাই একত্রিত হতে। সবাইকে দীর্ঘ ২৩ বছর পর পেয়ে অসাধারণ এক অভিজ্ঞতা হলো।
২০০২ ব্যাচের আরেক ছাত্র ও উদযাপন পরিষদের আহবায়ক ইমাম হোসেন ইমন স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্যে বলেন-কৈশোরের বন্ধুত্ব কখনও হারায় না, হারিয়ে যাবার নয়। জীবন জীবিকার তাগিদে আমরা হয়তো ব্যস্ত থাকি, কিন্তু ছেলেবেলা কখনও মুছে যায় না, অমলিন হয়ে থাকে স্মৃতিপটে।
এ কারণে জীবন চলার পথে যতো মানুষের সঙ্গেই বন্ধুত্ব হোক না কেন, স্কুলজীবনের বন্ধুত্বের মতো তারা কখনও স্মৃতিময় বন্ধুত্বের বন্ধন আর হয় না।
জীবনের প্রকৃত বন্ধুই হলো স্কুল জীবনের খেলার সাথীরাই। তারাই প্রকৃত বন্ধু। এ কারণেই আমরা সবাই মিলে চেয়েছিলাম এমন একটা আয়োজন করতে যেখানে সবাই একসঙ্গে দীর্ঘ ২৩ টি বছর পর একত্রিত হতে পারবো। এমন সফল একটি আয়োজন আমাদেরকে ছেলেবেলা, স্কুলজীবনকে ফিরিয়ে দিয়েছে..।
মধ্যাহ্নভোজের বিরতি শেষে ২০০২ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের খেলাধূলা, নাচ-গান ও বাদ্য-বাজনার তালে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পুরো আয়োজনে আনে ভিন্ন মাত্রা।
২০০২ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন জহির উদ্দিন, সাইদুল ইসলাম শাহিন ,বোরহান উদ্দিন, নঈমুল ইসলাম,আরিফুল ইসলাম, আইফুর রহমান, সাইফুল ইসলাম, লুৎফর রহমান পিন্টু, নজরুল ইসলাম, মো.রাজু, মো.মানিক, নাজিম উদ্দিন, মো. রুবেল, রিপন চন্দ্র দাশ, সুজন, আলতাফ হোসেন, আলা উদ্দিন, মিনতি নাথ, লাভলী আক্তার, রুজিনা আক্তার,নুর নবী মামুন প্রমুখ।