যৌতকের জন্য গৃহবধুকে পিটিয়ে হত্যা !

আরিফুর রহমান, কক্সবাজারঃ

কক্সবাজারের পেকুয়ায় যৌতকের জন্য নিশাত মনি (২২) নামের এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা করেছে তার স্বামী। শুক্রবার (১৬ জুলাই) সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার ধনিয়া কাটা এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে। নিহত গৃহবধূর স্বামী সেলিম উদ্দিন (২৭) কে আটক করেছে পুলিশ। নিহত নিশাত মনি কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ ইউনিয়নের আব্দু শুক্কুরের মেয়ে ও একই এলাকার সেলিম উদ্দিনের স্ত্রী। সে বর্তমানে এক সন্তানের জননী।

নিহত গৃহবধূর পরিবার সূত্রে জানা যায়, আড়াই বছর আগে নিশাত মনির সাথে সেলিম উদ্দিনের বিয়ে হয়। ভালোই কাটছিলো তাঁদের সংসার। বছরখানেক আগে তারা পেকুয়ায় এসে বাড়ি করে বসবাস শুরু করপ। সেখানেও ভালো যাচ্ছিলো তাদের সংসার।

গত ছয় মাস ধরে যৌতুকের জন্য স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অমিল দেখা যায়। স্ত্রীকে বিবাহের সময় দেওয়া সব স্বার্ণালংকার সেলিম উদ্দিন বিক্রি করে দেয়। শেষ সম্বল হিসেবে রইলো একজোড়া কানের দুল। প্রায় সময় যৌতুকের জন্য নিশা মনিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালালে শ্বশুর বাড়ি থেকে একাধিকবার যৌতুকের টাকাও দেওয়া হয় স্বামী সেলিম উদ্দিনকে।

সর্বশেষ শুক্রবার সকাল ৭ টার দিকে পুনরায় যৌতুকের টাকার জন্য মারধর শুরু করে। নিশাত মনি সকাল ৭ টার দিকে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে অসহ্য হয়ে মা হোসনে আরা বেগমকে ফোন করে।

মেয়ের মা ও পরিবারের লোকজন বাড়িতে পৌঁছার আগেই স্বামী ও তাঁর এক বন্ধুর শারীরিক অত্যাচারে মারা যান নিশাত মনি। পরে তাঁর মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে অপ্রচার চালায় স্বামী সেলিম উদ্দিন।

নিহত গৃহবধূর মা হোসনে আরা কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, নিশাত মনি আমার এক মাত্র মেয়ে, আড়াই বছর আগে সেলিমের সাথে তাঁর বিয়ে হয়। গত ছয়মাস ধরে যৌতুকের টাকার জন্য নিশাত মনিকে শারীরিক নির্যাতন করে আসছে স্বামী সেলিম উদ্দিন।

একাধিক বার টাকাও দিয়েছি। যখন যা চেয়েছে সব দিয়েছি। সর্বশেষ শুক্রবার সকালে সেলিম উদ্দিন ও তাঁর এক বন্ধু মিলে আমার মেয়ের উপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। তাঁদের মারধরের এক পযার্য়ে নিশাত মনির মৃত্যু হয়।

ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া জন্য মুখে বিষ ঢেলে আত্মহত্যা করেছে বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচারের দাবি জানায়।

পেকুয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কানন সরকার বলেন, লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামী সেলিম উদ্দিনকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। হত্যা নাকি আত্মহত্যা তদন্ত করা হচ্ছে।