বুধবার , ২১শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মোঃ শিবলী সাদিক, রাজশাহীঃ
বিগত সরকারের বিমাতা আচরণ পরিত্যাগ করে নতুন পরিবেশে রাজশাহীর পবা উপজেলার হাটবাজার ইজারার কার্যক্রম সম্পূর্ণ বৈষম্যমুক্ত হতে যাচ্ছে।
রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত পরিবেশে ইজারা টেন্ডারে অংশ নিয়েছেন ইজারাদারা। ফলে রেকর্ড সংখ্যক শিডিউল বিক্রির পাশাপাশি ইজারামূল্যও বেড়েছে প্রায় কয়েক গুণ।
গত মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ছিল দরপত্র বিক্রির শেষ দিন।
উপজেলার ১২টি হাটের বিপরীতে ৮৬টি দরপত্র ফরম বিক্রি হয়েছে-যার মূল্য প্রায় ২ লাখ টাকা।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় উপজেলা পরিষদের হলরুমে দরপত্রের বক্স খোলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরাফাত আমান আজিজ।
এসময় হাটবাজার ইজারার দরপত্র মূল্যায়ন শেষে উপজেলার ১২টি হাটের বিপরীতে ১০টি হাটের ইজারা চূড়ান্ত করা হয়।
অবশিষ্ট রামচন্দ্রপুর ও বিলনেপালপাড়া হাট দুইটির বিপরীতে কোন দরপত্র বক্সে জমা হয় নাই।
এতে দেখা যায়, হাটবাজার ইজারার ১ নম্বর তালিকায় থাকা দামকুড়া পশুহাটটি ১ কোটি ১১ লাখ ১১ হাজার ১১১ টাকায় সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে জেলা বিএনপির সদস্য ও দামকুড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী পেয়েছেন, যা গত বছরের ইজারা মূল্যের চেয়ে প্রায় ৭৫ লাখ ১১ হাজার ১১১ টাকা বেশি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে শাহজাহান আলী জানান, ১৯৮৯ সালে সর্বপ্রথম দামকুড়া পশুহাটটি চালু হয়। কিন্তু স্বৈরাচার সরকারের আমলে ২০০৮ সালের পর থেকে কৌশলে দামকুড়া পশুহাটটি বন্ধ রাখা হয়েছিল। সপ্তাহে বুধবার ও রবিবার এই দুইদিন নগরীর সিটি হাট ও দামকুড়া পশুহাট বসে।
এই দুই হাটের বার একই হওয়ায় কৌশলে ইজারা নিয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর বন্ধ রাখা হয়ে ছিল দামকুড়া পশুহাটটি। ফলে বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময় কাগজ কলমে সবকিছু ঠিক থাকলেও কৌশলে বঞ্চিত করা হয়েছিল প্রায় অর্ধকোটি টাকার রাজস্ব থেকে। সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে হাটটি আমি ক্রয় করেছি। এর ফলে দীর্ঘ ১৬ বছর পর আবার চালু হবে বহুল কাঙ্ক্ষিত দামকুড়া পশুহাট।
পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরাফাত আমান আজিজ বলেন, গত তিন বছরের বাজার দরের গড় হার এবং ৬ শতাংশ বৃদ্ধি করে বাজারের কাঙ্ক্ষিত মূল্য নির্ধারণ করা হয়। নির্ধারিত মূল্যের নিচে নেওয়ার সুযোগ নেই। বাজারের মূল্য যত বেশি হবে সরকার রাজস্ব তত বেশি পাবে।
উল্লেখ্য, দামকুড়া পশুহাটের সর্বোচ্চ দরদাতা হচ্ছেন সাজাহান আলী, যার ইজারামূল্য হচ্ছে এক কোটি ১১ লাখ ১১ হাজার ১১১ টাকা। দামকুড়া তহহাটের সর্বোচ্চ দরদাতা হচ্ছেন রুহুল আমিন বাবলু, যার ইজারামূল্য হচ্ছে ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। পারিলার খড়খড়ি হাটের সর্বোচ্চ দরদাতা হচ্ছেন রেজাউল করিম, যার ইজারামূল্য হচ্ছে ৬৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। পারিলা হাটের সর্বোচ্চ দরদাতা হচ্ছেন ফরহাদুল, যার ইজারামূল্য হচ্ছে ১৫ হাজার ৩০০ টাকা। বড়গাছি হাটের সর্বোচ্চ দরদাতা হচ্ছেন ফয়সাল হোসেন, যার ইজারামূল্য হচ্ছে ২০ লাখ ৫৯ হাজার ১০০ টাকা। গোপাল হাটের সর্বোচ্চ দরদাতা হচ্ছেন গোলাম মওলা, যার ইজারামূল্য হচ্ছে ১ লাখ ১২ হাজার টাকা।
হরিপুর হাটের সর্বোচ্চ দরদাতা হচ্ছেন হাসান আলী, যার ইজারামূল্য হচ্ছে ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা।
হুজুরীপাড়া ইউনিয়নের দারুশা হাটের সর্বোচ্চ দরদাতা হচ্ছেন হাসান আলী, যার ইজারামূল্য হচ্ছে ১০ লাখ ২৭ হাজার ৫৫০ টাকা। ডাঙ্গের হাটের সর্বোচ্চ দরদাতা হচ্ছেন হাসান আলী, যার ইজারামূল্য হচ্ছে ২ লাখ ৩২ হাজার টাকা।
এছাড়াও দর্শনপাড়ার মড়মড়িয়া হাটের সর্বোচ্চ দরদাতা হচ্ছেন মহির উদ্দিন, যার ইজারামূল্য হচ্ছে ৩ লাখ ১৯ হাজার টাকা বলে পবার ইউএনও অফিস সূত্রে জানা গেছে।