সোমবার , ২০শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তাবারক হোসেন আজাদ, লক্ষ্মীপুরঃ
শীতের শুরুতে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে হয়ে গেলো শিক্ষার্থীদের পিঠা উৎসব। নিজ হাতে বানানো দেড় শতাধিক পিঠার পসরা সাজিয়ে আটটি স্টল নিয়ে বসে স্কুল শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। দারুণ এ আয়োজন দেখতে ও পিঠার স্বাদ নিতে ক্যাম্পাসে ছিল বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের পদচারণা।
এছাড়াও দুইদিন ব্যাপী শিক্ষার্থীদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরন অনুষ্ঠান শেষ করা হয়েছে।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে রায়পুর শহীদ মিনার সংলগ্ন স্মার্ট স্কুল ক্যাম্পাসে এ আয়োজন করা হয়। ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ পিঠার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিতে শীতের মৌসুমে এ আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি। ফুলে সজ্জিত ফিতা কেটে পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন রায়পুরের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্কুল পরিচালনা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ফজলুল করিম।
এসময় থানার ওসি নিজাম উদ্দিন ভুইয়া, স্কুল পরিচালক সায়েম চৌধুরী, সাংবাদিক তাবারক হোসেন আজাদ, প্রধান শিক্ষক মাহিনুর আলম মিশু উপস্থিত হয়ে পিঠার স্টলগুলো ঘুরে দেখেন। পিঠা উৎসবে ঘুরে হাইমাউ মিঠা, রস ভরা পিঠা ঘর, নকশী পিঠা, রকমারি ও টকঝাল মিষ্টি সহ বিভিন্ন নামে ৭টি দোকান দেখা যায়।
এতে ডাল পাকন, শুকনা পিঠা, লতা পিঠা, শামুক পিঠা, সাকুর পিঠা, পদ্মার ইলিশ পিঠা, পাটি সাপটা, পান্তুয়া, জেলি কেক, বরফি, দুধ চিতল, ভাপা পিঠা, নকশি পিঠা, ঝুনঝুনি পিঠা, মুগ পাকন, ক্ষীর পাটি সাপটা, হৃদয় হরণ ও নারিকেল বেলি পিঠাসহ দেড় শতাধিক পিঠা দেখা গেছে। একেকটির স্বাদ একেক রকম। একেকটি দোকানে ৩০ ধরনের পিঠা থাকলেও সবগুলোর নামও অজানা শিক্ষার্থীদের। ৫ম শ্রেণির ছাত্রী তাবাস্সুম বিনতে বলেন, পিঠাগুলো আমরা নিজ হাতেই বানিয়েছি। অবশ্যই মাসহ অন্যদের সহযোগিতা নিতে হয়েছে। অনেক পিঠার নাম আমরা জানতাম না।
এ আয়োজনের মাধ্যমে পিঠাগুলো বানানো শিখলাম। পিঠার নামও শিখতে পেরেছি। প্রিয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। পিঠা উৎসব দেখতে আসা গৃহিনী খুশবু আক্তার বলেন, আমার বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগন্জ উপজেলায়।
স্বামীর চাকুরী ও বাচ্চার লেখাপড়ার সুবাধে এখানে থাকি। স্কুলে পিঠা উৎসবের খবর পেয়ে দেখতে এসেছি। মনমুগ্ধকর একটি আয়োজন ছিল। কয়েকটি পিঠা খেয়েছি ও কিনেছি। মজার খাবার ছিল। প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক মাইনুর আলম মিশু বলেন, শীতের শুরুতে আমরা পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছি। সেই সাথে প্রতিষ্টানে ভর্তি উৎসবও চলছে। সবগুলো পিঠা অভিভাবকদের সহযোগিতায় শিশু শিক্ষার্থীরা বানিয়েছে। প্রতিটি স্টলেই নতুন ধরনের পিঠা দেখছি।
আয়োজনটি শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা দারুণভাবে উপভোগ করেছেন। অনুষ্ঠানে অভিভাবকদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের উপস্থিতি সরব রয়েছে।
রায়পুর থানার ওসি নিজাম উদ্দিন ভুইয়া বলেন, পিঠা উৎসব অসাধারণ একটি আয়োজন ছিল। প্রত্যেকটি স্টল ঘুরে দেখেছি। সত্যিই অভিভূত। স্টলগুলোতে এতো পিঠা উঠেছে, এরমধ্যে অনেক পিঠার নাম নিজেও জানি না। গ্রামীণ ঐতিহ্য ধারণে স্মার্ট স্কুলের এ আয়োজন প্রশংসনীয়। এ উৎসবটি পুরনো স্মৃতি মনে করিয়ে দিয়েছে।