বুধবার , ১৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৪ঠা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
তাবারক হোসেন আজাদ, লক্ষ্মীপুরঃ
ঈদের ছুটিতে ঢাকা-চট্রগ্রামসহ বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে গ্রামের বাড়ীতে আসতে শুরু করেছেন। কিন্তু রায়পুর-পানপাড়া সড়কে ঢুকতেই পরিবহন চালকদের দুর্ভোগ শুরু হয়।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে ৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে রায়পুর-পানপাড়া ৬ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার কাজ করা হয়। কাজ শেষ করার চার দিনের মাথায় (২৭ ফেব্রুয়ারী) গুরুত্বপুর্ণ আঞ্চলিক সড়কটির কয়েকটি অংশে উঠে যায় পিচ।
নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ করে এলাকাবাসী হাত দিয়ে সড়কের পিচ তুলে ফেলে ছিলেন।
সোমবার (২ জুন) সড়কের তিন কিলোমিটার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নিম্নমানের বিটুমিন, বালি, পাথরের মিশ্রণে কাজ করায় যানবাহন চলাচলের সময় চাকার সঙ্গে অনেক জায়গার কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়।
তিন বছরের মাথায় গত পাঁচ মাসে সড়কটির রায়পুর সরকারি কলেজ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে, ব্রাক অফিস, জোড়পুল, নয়ারহাট, ওয়াজউদ্দিনের পুল ও পানপাড়া তিন রাস্তার মোড়সহ কয়েকটি স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে।
এছাড়াও পৌরসভার টিএন্ডটি সড়ক ও মহিলা কলেজ সড়ক, টিসি সড়ক সহ ৯টি ওয়ার্ডে ও রায়পুর-হায়দরগন্জ সড়কের শহরের ট্রাফিক মোড় থেকে মডেল মসজিদ পর্যন্ত, গাজিনগর সড়ক, রুস্তমআলী কলেজ সড়ক খুবই বেহাল।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে সড়ক সংস্কার করায় কাজ শেষ হওয়ার চারদিনের মাথায় সড়কের কয়েকটি অংশের পিচঢালাই (কার্পেটিং) উঠে গিয়েছিল। পাথর, বিটুমিনসহ সংস্কারকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। গত ৪-৫ মাস ধরে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
নিয়ম অনুসারে ওই সড়কে কমপ্রেশার মেশিন দিয়ে সড়ক পরিষ্কার করে প্রাইম কোট দিয়ে পিচ ঢালাইয়ের কাজ হওয়ার কথা থাকলেও আওয়ামীলীগের অসাধু ঠিকাদার তা করেনি। ঠিকাদাররা গাছের পাতা ও ময়লার উপরই কার্পেটিংয়ের কাজ করে গেছেন।
২০২২ সালের শুরুর দিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে পল্লী সড়ক ও ব্রিজ-কালভার্ট মেরামতকরণ জিওবি মেইনটেন্যান্স প্রকল্পের আওতায় খানাখন্দে ভরা রায়পুর-পানপাড়া ছয় কিলোমিটার সড়কের সংস্কার অনুমোদন হয়।
এলজিইডির রায়পুর কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ‘সড়কটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এলজিইডি মন্ত্রনালয় থেকে আরসিআইপি প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করে দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স তমা এন্টারপ্রাইজ ও এম এ ইঞ্জিনিয়ারিং কাজটি করেছিলেন। ৬ কিলো মিটার সড়কে ৯ কোটি ১৭ লাখ বরাদ্দ হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু করতে না পারায় শেষ সময়ে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে কাজটি শেষ করেছে ঠিকাদারি দুই প্রতিষ্ঠান।
রায়পুর-পানপাড়া সড়কের কাজের ঠিকাদার আবু তাহের এবং ভুলু চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা ফোন রিসিভ করছেননা।
রায়পুর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী সুমন মুন্সি বলেন, গুরুত্বপুর্ন সড়কটি বড় বাজেট ছাড়া ঠিক হবেনা। গত ৭-৮ দিনের টানা বৃষ্টিতেও রাস্তা খারাফ হয়। সরজমিন পরিদর্শন করে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।