রবিবার , ২৩শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তাবারক হোসেন আজাদ, লক্ষ্মীপুর:
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে পৌরসভাসহ ১০টি ইউনিয়নের খালগুলোও দখল করে নির্মাণ করা হচ্ছে স্থাপনা। এসব স্থাপনা যাতে ভেঙে না পড়ে, সে জন্য তৈরি করা হয়েছে পার্শ্বদেয়াল (গাইড ওয়াল)। দখল করা জমিতে লাগানো হয়েছে গাছ। কেউ আবার সেখানে বালু-ইট রেখে বেচাকেনাও করছেন।
প্রশাসনের কাছে উচ্ছেদের বিষয়ে অভিযোগ দিলেও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেননা বলে অভিযোগ করেন গ্রামবাসীরা।। চরবংশি ভূমি কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, আগে খালের প্রস্থ ছিল ১২০-১৫০ ফুট। দখলদারদের কারণে খালের প্রস্থ এখন ৬০-৬৫ ফুট। চরবংশি খালের অন্তত ৮০ শতাংশ জমি দখল করে আছেন একাধিক ব্যাক্তি।
সরেজমিন পরিদর্শন করে এই তালিকা তৈরির কাজ করা হয়েছে। উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাসেল ইকবাল বলেন, খালের দখলদারদের তালিকা করা হয়েছে। উত্তর চরবংশি, দক্ষিন চরবংশি, উত্তর চরআবাবিল ও দক্ষিন চরআবাবিল ইউনিয়নই না, ১০টি ইউনিয়নের খালের তীরে গড়ে উঠেছে ইমারত ও বহুতল ভবন। একে কেন্দ্র করে গড়ে উঠছে নতুন নতুন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
সহসাই খাল থেকে দখল উচ্ছেদে অভিযান হবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক শতাংশ জমি ছয়–সাত লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জমির দাম বাড়ার কারণে এবং প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় প্রভাবশালীরা খালের দুই পাশের জমি দখল করছেন। মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর সংযোগ রায়পুরের ইউনিয়ন গুলোর মধ্যে কয়েক ভাগে ছড়িয়ে পড়েছে। বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, দক্ষিন চরবংশি ইউপি মির্জাকান্দি এলাকায় হারুন গাজি নামে এক ব্যবসায়ী খালের মধ্যে আরসিসি পিলার করে স্থাপনা নির্মাণ করছেন।
আরো কয়েকজনও দোকান নির্মাণ করেছেন।। হায়দরগঞ্জ, মোল্লারহাট, খাসেরহাট ও বংশীব্রীজ বাজার এলাকায় খালগুলোতে বাজারের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। খালের পাশে অবৈধ বসতি উঠছে। হায়দরগঞ্জবাজার, মোল্লারহাট ও চরবংশির স্টিল ব্রীজ সংলগ্ন কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, এখানে বরিশাল, ঝালকাঠি, চাঁদপুর, ঢাকা, চট্টগ্রাম থেকে রড, সিমেন্ট, টিন, ইট, বালু, পাথর, মুদি মালামালের কার্গো-লাইটার জাহাজ আসে।
খালের ভেতর মালবাহী নৌযান প্রবেশ করতে না পারলে খরচ বেড়ে যাবে। খালের দুই পাশ দখল হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দখলকারীরা ভাটার সময় তীরে বাঁশ-কাঠ দিয়ে পার্শ্বদেয়াল নির্মাণ করেন। জোয়ারের সময় পলি জমে, পরে সেখানে গাছ লাগিয়ে, ইট-বালু ফেলে খালের তীর ভরাট করেন। পরে সেখানে বহুতল ভবনের পিলার নির্মাণ করা হয়। কেউ দখল করা জমিতে পাথর, বালু, ইটের ব্যবসা করছেন।
কেউ প্লট আকারে বিক্রি করছেন। রায়পুরের কেরোয়ার ইউপির মোল্লারহাট এলাকা, জোড় পুল এলাকা, ওয়াজউদ্দিনের পুল এলাকা, রায়পুর এলএম পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে বর্ডারবাজার পর্যন্ত সড়কের দুইপাশ, দক্ষিন চরবংশি ইউপির মোল্লারহাটবাজার, খাসেরহাটবাজার, হায়দরগঞ্জবাজার, বংশী ব্রীজবাজার, মিয়ারহাট বাজার, বেড়িবাঁধ সড়কের দুইপাশ এলাকায় খাল দখলের কথা স্বীকার করেন স্থানীয় দখলদাররা। খালের পাঁচ–ছয় হাত ভরাট করে তারা ভবন তুলেছেন।
তারা এও দাবি করে বলেন, ভূমি কার্যালয় থেকে তাঁরা ডিসিআর কেটে এ ইমারত ও ভবন নির্মাণ করেছেন এবং করছেন। পাউবোর চাঁদপুরের কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গির হোসেন বলেন, শুধু রায়পুর উপজেলাতেই নয়, আমাদের অধিনে যত খাল রয়েছে,তা সরেজমিন পরিদর্শন করে দখলদারদের চিহ্নিত করে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লক্ষ্মীপুর ০১৭১৮০৭৮৪৩৯ ৩১/১২/০২১ ছবির ক্যাপশান– বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, দক্ষিন চরবংশি ইউপি মির্জাকান্দি এলাকায় হারুন গাজি নামে এক ব্যবসায়ী খালের মধ্যে আরসিসি পিলার করে স্থাপনা নির্মাণ করছেন। অন্যদিকে-আরো কয়েকজনও দোকান নির্মাণ করেছেন।।