শুক্রবার , ২৪শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ১০ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তাবারক হোসেন আজাদ, লক্ষ্মীপুরঃ
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে হয়রানির অভিযোগে তাকে বয়কটের সিদ্ধান্ত ইউপি চেয়ারম্যানরা। কারণে-অকারণে চেয়ারম্যান ও মেম্বারসহ সেবা নিতে আসা লোকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ অভিযোগ করেন ইউএনওর বিরুদ্ধে।
ইউএনওর বিদায় না হওয়া পর্যন্ত তার সঙ্গে কোন কাজ বা সভা করবেন না বলে উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করেন ১৭ জন ইউপি চেয়ারম্যান। তবে- ইউপি চেয়ারম্যানদের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইউএনও।
এঘটনায় গত রোববার (২৮ জুলাই) রাতে সদরের পৌরসভার চক বাজারের একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে প্রতিবাদ সভা করেছেন ১৭ জন ইউপি চেয়ারম্যান।
এসময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু এবং দুই ভাইস চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে ১৭ জন ইউপি চেয়ারম্যান মিলিত হন। এ সময় তারা ইউএনওর বিরুদ্ধে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে দ্বিগুণ কমিশন আদায়ের অভিযোগ তোলেন।
এতে সর্বসম্মতিক্রমে গত সোমবার মাসিক আইনশৃঙ্খলা ও সমন্বয় কমিটির সভা বয়কটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৯ জুলাই মাসিক আইনশৃঙ্খলা ও সমন্বয় কমিটির সভায় উপস্থিত হননি কোন ইউপি চেয়ারম্যান।
ইউপি চেয়ারম্যানদের অভিযোগের বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, তিনি যোগদানের পর থেকে মাঠপর্যায়ে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজগুলো নিয়ম অনুযায়ী বুঝে নেওয়ার জন্য কাজ করছেন। এতে কোন কোন চেয়ারম্যান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তারা মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন। চেয়ারম্যানদের কাছে কাজ করা বাবদ কমিশন দাবি ও খারাপ আচরণের অভিযোগ একেবারই সঠিক নয়।
আরও জানাযায়, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু ২৮ জুলাই রাতে ২১ জন ইউপি চেয়ারম্যানকে দাওয়াত করলে উপস্থিত হন ১৭ জন। সেখানে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ ইউসুফ পাটওয়ারী ও ফরিদা ইয়াসমিন লিকাও উপস্থিত ছিলেন। সভায় ইউপি চেয়ারম্যানরা উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে ইউএনওর বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরেছেন।
এছাড়াও প্রকল্প বাস্তবায়নে ১০ থেকে ৩০ ভাগ কমিশন আদায় পাশাপাশি জনপ্রতিনিধি ও সেবা প্রার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করার অভিযোগ তোলা হয়। পদেপদে হয়রানিরকথাওঠে আসে। সভায় অংশগ্রহন করা পাঁচজন ইউপি চেয়ারম্যান জানান, সদর উপজেলায় ২১টি ইউনিয়ন।
অসুস্থতা ও জরুরি কাজে এলাকায় না থাকায় চারজন চেয়ারম্যান সভায় উপস্থিত হতে পারেননি। তবে তারা ইউএনওর বিভিন্ন অভিযোগের আলোকে গৃহীত সিদ্ধান্তে একমত আছেন বলে মোবাইল ফোনে জানিয়েছেন।
দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর শাহ আলম বলেন, অনেকদিন পর আমরা একত্রিত হয়েছি। শুধু উপজেলা পরিষদের ভেতরের মসজিদে নামাজ পড়তে টাকা লাগে না। না হয় সব অফিসেই সেবা নিতে টাকা দিতে হয়। জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিলেও কোন লাভ হয়না।
সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইউছুফ পাটওয়ারী বলেন, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে আমাদের সভা হয়। ইউএনওর বিরুদ্ধে সবাই নানা অভিযোগ তোলেন। এজন্য সর্বসম্মতিক্রমে আইনশৃঙ্খলা ও সমন্বয় কমিটির সভায় কেউ অংশ নেয়নি।
শুক্রবার (২ আগষ্ট) সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু বলেন, ইউএনওর কর্মকাণ্ডে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা খুবই অতিষ্ঠ। বিভিন্ন কাজে ইউএনও আগের চেয়ে দ্বিগুণ কমিশন নিচ্ছেন। মানুষের সঙ্গে খারাফ ব্যবহারও করছেন।
এবিষয়ে বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বললে তিনি গুরুত্ব দেননি। বিষয়টি সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আগামী মাসে উপজেলা পরিষদের মাসিক আইনশৃঙ্খলা ও সমন্বয় কমিটির সভা বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অভিযোগ অস্বীকার করে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান বলেন, প্রতিবাদসভা করার বিষয়টি জেনেছি।
সভার আগেই দুইজন ইউপি চেয়ারম্যান আমার কাছে জানতে চেয়েছেনকেন উপজেলা চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন টিপু তাদের ডাকেন।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান বলেন, বিষয়টি জানতে পেরেছি। ইউএনওর সাথে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করা হবে।
লক্ষ্মীপুরে শিক্ষার্থীদের সাথে যুবলীগ-ছাত্রলীগের সংঘর্ষে আহত-১৫