হায়রে আমাদের নিষ্ঠুর সমাজ ব্যবস্থা। একটি নয় দুটি নয় সাতটি সন্তান থেকেও এক হতভাগ্য পিতাকে বেওয়ারিশ হিসেবে কবরে যেতে হলো।

চাঁদপুর মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুরের বাসিন্দা জামাল মোল্লা। তার ছেলে-মেয়ে  রয়েছে ৭ জন।

কয়েক মাস আগে তার সন্তানরা জামাল মোল্লাকে চাঁদপুর রেলওয়ে কোর্ট স্টেশনে খোলা আকাশের নিচে ফেলে রেখে চলে যান। এরপর সেখানেই অর্ধাহারে অনাহারে বিনা চিকিৎসায় ধুকেধুকে মারতে হয়েছে জামাল মোল্লাকে।

গত ৭ মে বুধবার দুপুরে রেলওয়ে থানার ওসি মো. মাসুদ আলম তার দাফনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, ৪ মে  শনিবার রাত ১টায় রেলওয়ে কোর্ট স্টেশনে তিনি মারা যান ।

স্থানীয়রা জানান, কয়েক মাস আগে কোর্ট স্টেশনে অবস্থানকালে জামাল মোল্লা নিজের নাম ও পরিবারের বিভিন্ন তথ্য জানিয়েছিলেন। তার বয়স ৮০ বছর। তিনি চাঁদপুরের মতলব উত্তরের মোহনপুর এলাকার বাসিন্দা। এখানে তার সন্তানরা তাকে রেখে চলে গিয়েছে।

স্হানীয়রা আরো জানান, তার পাঁচ মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে। তাদের বিয়ে দিয়েছেন তিনি। এক সময় তিনি মোহনপুরে ভালো ব্যবসায়ী ছিলেন এবং ছেলেদের নিয়ে সে ব্যবসা পরিচালনা করতেন।

কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস সেই ছেলে-মেয়েরাই তার অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে বাড়ি, ঘরসহ সব সম্পত্তি লিখে নিয়ে তাকে ফেলে রেখে যান চাঁদপুর শহরের কোট স্টেশন রেলওয়ে প্লাটফর্মে । তার স্ত্রী আছে কি না তা জানতে চাইলে কোনো কিছু না বলে তিনি শুধু চুপ করে সবার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতেন।

চাঁদপুর রেলওয়ে থানার ওসি মো. মাসুদ আলম বলেন, মৃত্যুর পরও তিনদিন বৃদ্ধার স্বজনদের খোঁজ পাইনি।

পরে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে তাকে দাফন করে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম সংস্থা। ওনার মৃত্যুর বিষয়ে রেলওয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।