শুক্রবার , ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

 চোরের ধাক্কায় ৫ তলার ছাদ থেকে

পড়ে মৃত্যু মাদ্রাসা শিক্ষক নিহত !

 

আরিফুর রহমান,

চোর ধরতে পাঁচতলা বিল্ডিংয়ের ছাদে উঠলে চোর মাওলানা ফখরুল কে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেয়৷ তৎক্ষণাৎ খিদমাহ হসপিটালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার হুজুরকে মৃত ঘোষণা করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

মালিবাগ জামিয়ার অন্যতম প্রবীণ উস্তাদ ছিলেন তিনি। দায়িত্বপালনে অত্যন্ত কঠোর ছিলেন। জীবনটা ছিল রুটিনমাফিক। নিজেরসহ পরিবারের সবার কাপড় নিজে ধুয়ে স্ত্রী করে দিতেন। রুটি বানানোসহ সংসারের অনেক কাজ নিজ হাতে করতেন। হেঁটে হেঁটে বাসা থেকে মাদরাসা, মাদরাসা থেকে মসজিদে যেতেন। বাসা বা মসজিদে যাওয়ার জন্য কখনো রিকশায় উঠেছি বলে জানাগেছে। এতটা কায়িক পরিশ্রমী মানুষ ছিলেন। শরীরে সামান্য পরিমাণ মেদ ছিল না বলেও জানান ছাত্ররা।

আরোও জানা যায়, তিনি সবসময় আগে আগে উঁচুস্বরে সালাম দিতেন, কেউ অস্পষ্ট উচ্চারণে সালাম দিলে তিনি খুব রাগ করতেন, পড়ানোর সময় প্রতিটি পড়া বুঝে বুঝে পড়াতেন, না বুঝলে বা না বোঝাতে পারলে সামনে আগাতেন না, সারা বছর এক পরিমাণ পড়াতেন, কখনো দরস মিস হতো না, নির্ধারিত সময়ে হুজুরের নেসাব শেষ হয়নি এমন কখনো হয়েছে বলে মনে হয় না, বয়স বেড়ে যাওয়ার পর হুজুরের স্মরণশক্তি কমে গিয়েছিল৷ মুতালাআ করে ক্লাসে আসার পরও অনেক সময় দেখা যেত কোন কিছু ভুলে গেছেন। তখন হুজুর কিতাব আনিয়ে সেই অংশ পড়ে ছাত্রদের বুঝিয়ে দিতেন।

অহংকার, রিয়া, তাকাল্লুফ বলতে কিছু ছিল না হুজুরের মাঝে৷ যশখ্যাতির জন্য জীবনে কিছু করেননি। সাদাসিধা, পরিপাটি, পরিচ্ছন্ন জীবন যাপন করতেন। অপরিচ্ছন্নতা একদম দেখতে পারতেন না। মিতব্যয়ী ছিলেন।

মৃত্যু কালে স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়ের দুনিয়াবি একমাত্র ভরসার জায়গা ছিলেন বলে জানাগেছে । যা আয় হত, তার প্রায় সব খরচ হয়ে যেত। বিলাসিতা করার চিন্তা কখনো করেননি তিনি। পরিবারের জন্য হুজুরের মৃত্যু এক বিরাট পরীক্ষাস্বরূপ বল্লেন, মাদ্রাসার অন্য আলেরা ।