বুধবার , ২৭শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ || ১২ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
মোল্লা তানিয়া ইসলাম তমা, তুরাগঃ
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে, মাদারীপুর সদর উপ-জেলার ছিলারচর ইউনিয়নবাসী তথা বিশ্ববাসীকে পবিত্র ঈদ-উল- ফিতরের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী- যুবলীগের মাদারীপুর সদর উপজেলা শাখার যুগ্ন-আহবায়ক, মাদারীপুর সরকারি নাজিম উদ্দিন কলেজের ছাত্র-ছাত্রী সংসদের সাবেক সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক ও আসন্ন ছিলারচর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী-দলীয় সম্ভব্য চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রিপন কাজী । ছিলারচর ইউনিয়নবাসী তথা বিশ্ববাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন তিনি ।
তার দেওয়া বিবৃতিতে তিনি উল্লেখ্য করেন, এক মাস সিয়াম সাধনা শেষে খুশীর সওগাত নিয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর আমাদের দ্বারে সমাগত । ঈদুল ফিতর হলো মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার সমাপনী অনুষ্ঠান । এ পবিত্র রমজান মাসেই আল্লাহ মানবজাতির হেদায়াতের জন্য পবিত্র কুরআন নাযিল করেছেন । রমজানের দাবি হলো কুরআনের আলোকে একটি তাকওয়া ভিত্তিক সমাজ কায়েম করা । মাহে রমজানের সিয়াম সাধনা ও ঈদুল ফিতর আমাদেরকে সমাজে ন্যায় ও ইনসাফ কায়েম করতে উদ্বুদ্ধ করে । তিনি বলেন, রমজানের রোজার শেষে খুশির সওগাত নিয়ে আসছে ঈদ ।
মূলত ঈদ আনন্দের আসল ভাগিদার হচ্ছেন যারা এক মাস রোজা রেখে অভুক্ত থাকার কষ্টকে অনুভব করেছেন । নামাজ, তারাবিহ, ইবাদত-বন্দেগি এবং ইসলামের অনুশাসন পালন করেছেন তাদের জন্য এই ঈদ আনন্দ বেশি উপভোগের, উচ্ছ্বাসের ও শান্তির । এই ঈদ আনন্দ তাদের জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে এক মহাপুরস্কার । তখন সেসকল রোজাদারদের চোখে-মুখে থাকে আনন্দ আর উচ্ছাস । এই ঈদ প্রতিটি মুসলমানের ঘরে ঘরে নিয়ে আসে নির্মল আনন্দের সওগাত। ঈদ মানেই অনাবিল আনন্দ ও খুশির উৎসব । ঈদ মানেই বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে হারিয়ে যাওয়ার দিন ।
ঈদ মানে সম্প্রীতি, ভালোবাসার বন্ধনে একে অপরকে নতুন করে আবদ্ধ করে নেয়ার দিন । তাইতো এই আনন্দের দিনে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে আমরা যেন গেয়ে উঠি- “ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে, শোন আসমানী তাগিদ। তোর সোনা-দানা, বালাখানা সব রাহে লিল্লাহ দে যাকাত , মুর্দা মুসলিমের আজ ভাঙ্গাইতে নিঁদ ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।” অতঃপর এক মাস রোজা রাখার পর মুসলমানরা নতুন পাজামা-পাঞ্জাবি তথা পছন্দের পোশাক পরে, দেহে আতর খুশবু মেখে যখন ঈদগাহে যান, তখন ফেরেশতারা তাদের সংবর্ধনা জানান । স্বর্গীয় সব বাণীতে তাদের অভিনন্দিত করেন ।
ঈদুল ফিতর মুসলিম উম্মাহর জন্য এক সর্বজনীন ধর্মীয় উৎসব তাতে কোনো সন্দেহ নেই । ধনী-দরিদ্র, ছোট-বড়, শাসক-শাসিত ও আবালবৃদ্ধবনিতা সবার জন্য ঈদের আনন্দ যেন সমান ও ব্যাপক হয়, ইসলামে সেই ব্যবস্থা রয়েছে । এদিন দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ শেষে মুসল্লিরা সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির অংশ হিসেবে কোলাকুলি করবেন একে অপরের সঙ্গে । দোয়া ও মোনাজাত করবেন বিশ্ব মুসলিমের ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা এবং মুসলিম জাহানের উন্নতি ও সমৃদ্ধি কামনায় । এরপর আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে বাসাবাড়িতে গিয়ে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করবেন ।
মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে যেনো পবিত্র ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ শেষ করার মাধ্যমে সকল কবীরা ও সগীরা গুণাহ সমূহ মাফ করে দিয়ে মাছুম বান্দা হিসেবে কবুল করেন । আমীন। সবাইকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের মোবারকবাদ জানাচ্ছি । শুভ হোক সবার জন্যে পবিত্র ঈদুল ফিতর । জনাব রিপন কাজী আরও বলেন, বিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতি ভাইরাস কোভিড-১৯ বা করোনার ভয়াবহ সংক্রমণে মানুষ যখন দিশেহারা ঠিক সেই মুহূর্তে পবিত্র ঈদুল ফিতর আমাদের দ্বারে সমাগত । এমতাবস্থায় আমি অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আমার প্রাণপ্রিয় ছিলারচর ইউনিয়নবাসী তথা বিশ্ববাসীকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি, ঈদ মোবারক । বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ায় এবারের ঈদের আনন্দ অন্য সব সময়ের চেয়ে ভিন্নতর । ভয়াবহ এই দুর্যোগে বর্তমানে বাংলাদেশের পরিস্থিতি কিছুটা হলেও উন্নতির দিকে যাচ্ছে ।
লকডাউনের কারণে প্রান্তিক ও নিম্ন আয়ের মানুষ অবরুদ্ধ ও কর্মহীন হওয়ায় কিছুটা মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে । সরকার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে তাদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা, খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দেশের সাধারন মানুষের মাঝে পর্যাপ্ত পরিমাণে দেওয়া হচ্ছে । দেশ ও জাতির এই ক্রান্তিকালে সরকারের পাশাপাশি মাননীয় প্রধান মন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সার্বিক দিক নির্দেশনায় আদর্শবাদী ও গণমুখী রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক সংগঠনগুলোও সাধারণ মানুষের দুর্দশা লাঘবে ব্যাপক ভিত্তিক ঈদসামগ্রী বিতরণ ও ত্রাণতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন ।
সেই সাথে এই বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত ও অসহায় মানুষের পাশে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে এবারের ঈদ-উল-ফিতর উদযাপন করার জন্য সর্বস্তরের জনগনসহ সবার প্রতি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি । তিনি আরও বলেন, ঈদ মুসলমানদের জীবনে নিয়ে আসে অনাবিল আনন্দ । আমাদের জাতীয় জীবনেও ঈদুল ফিতরের গুরুত্ব অপরিসীম । ঈদের উৎসবে মুসলিম উম্মাহ শোষণ ও বঞ্চনামুক্ত বিশ্ব গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় গ্রহণ করে । ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করতে দেশের দুঃস্থ, দরিদ্র ও সঙ্গতিহীন মানুষের প্রতি ভ্রাতৃত্ব ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে সমাজের বিত্তবান মানুষরা ঈদের আনন্দকে সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন জনাব রিপন কাজী ।
সেই সাথে ঈদের সালাত আদায় ও ঈদ উদযাপনে স্বাস্থ্য বিধি ও সামাজিক দূরত্ব নির্দেশিকা মেনে চলার জন্য সকলকে আহবান জানান । করোনার এই মহামারি থেকে পরিত্রাণ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত ক্ষয়-ক্ষতি কাটিয়ে উঠার তৌফিক কামনা করে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট বিশেষ সাহায্য কামনা করেন তিনি ।