Update Time : অক্টোবর, ২০, ২০২১, ১২:৪২: পূর্বাহ্ন
আমার অতীত-শফিউল আলম হৃদয়
ও হে লেখক,,,,, আমি তোমার উপন্যাসের সেরা উপাদান,
চাইলে তুমি আমায় নিয়ে লিখতে পারো,
আমার জীবন গল্পটাতে সবকিছু পাবে তুমি,
হয়তো হেথায় আনন্দের চেয়ে দুঃখটাকেই বারবার দেখতে পাবে।
তাতে কি, তুমি তো লেখক,,,,,,
রস কষের তো কমতি নেই তোমার কলমে,
মাঝে মাঝে দু এক ফোটা রস ঢেলে দিও,
তবে খেয়াল রেখো খুব যেন বেশি না হয়।
কারন, আমি কিন্তু এখন হাসতে ভুলে গেছি,
অভিনয়টাও খুব বেশি রপ্ত করা হয়নি,
যে তুমি চাইলেই এক গাল হেসে দিবো।
দেখেই তো বুঝতে পারছো,
আমার বয়সের ভারে চামড়াগুলোতে ভাজ পড়ে গেছে,
চোখের নিচে জমে আছে রাজ্যের কালি,
সুখি হওয়ার ভান করা যে আমার সাঁজেনা।
তবে,,,,,,, তুমি চাইলে বারবারই দুঃখটাকে খুব করে ফুটিয়ে তুলতে পারি।
নিশ্চয় জানতে চাইবে এই ধরায় কি কেউ নেই আমার ?
কে বলেছে কেউ নেই? সব আছে,,,,,,, আলিশান বাড়ি,
শান বাঁধানো পুঁকুর ঘাট,
ফলে ফুলে ভরা বিশাল বাগান,
পুরো বাড়ি জুড়ে ঘর আর ঘর,
নানা রঙে নানা ঢঙে সাঁজানো,
খুব দামী দামী আসবাপত্র,
নামকরা চিত্র শিল্পীর সব তৈল চিত্র,
সারা বাড়ি জুড়েই ছোট ছোট বাচ্চাদের দৌড়ঝাঁপ চেঁচামেচি,
গম্ভীর মুখ করে সারা দিন ব্যস্ত থাকা বাবা,
আর কড়া মেজাজের কয়েকটা ভাই,
আর আহ্লাদী বোন,,,,,,, ছোট বোনের আহ্লাদী এক মেয়ে,
সাথে তার স্বামীটিও।
খাবার টেবিলটা বেশ বড় ছিলো,
সবাই মিলে একসাথে খেতে বসা,
কেউ মাংস খাবে না,
কেউ মাছ খাবে না,
কারো বা ডিম ভাজা চাই-ই চাই।
বিশাল এক হল রুম,
সবাই মিলে অবসরটুকু কাটিয়ে দিতো নানা রকমের খোশ গল্পে,
কেউ হাসছে কেউ অভিমানে ফুসছে,
আবার কেউ পেছন থেকে হুট করেই চিৎকার করে উঠছে।
কি যে সুখ রে লেখক !!!
কেমন করে বর্ণনা করি তোমায়,
এই সুখের যে শেষ নেই,
সিমাহীন সুখ আর সুখ।
দাঁড়াও লেখক,
একটু দাড়াও,,,,,,
এখনই কিন্তু লিখতে শুরু করে দিওনা।
উপরে যা যা বলেছি,
তা কিন্তু সব আমার অতীত,
তা কিছুই কিন্তু বর্তমান নেই,
তুমি আবার যেন লিখে দিওনা,
সব থেকেও এই আমার আজ কিছুই নেই।
সত্যি বলতে কি,,,,,,,
কেউ নেই আমার,
কিচ্ছু নেই একেবারেই কিচ্ছু নেই,
যার বাবা নেই,,
তার এই পৃথিবীতে কিছু নেই,,
মাথায় হাত রেখে ভরসা দেয়া লোকটাও ফাকি দিয়েছে,
হয়তো সে ওপারে বেশ ভালোই আছে।
কতো করে বললাম,,,,,,
যেতে যদি হয় আমাকেও সাথে নিও,
না,,, বাবা তা শুনলো না।
চলে গেলো সব অভিমান বুকে চেপে,
যাবার বেলায় শুধু বলে গেলো,
শরীরের ঘাম জড়িয়ে,
যা কিছু কামায় করলাম সব রেখে গেলাম আমি,
আমার কাছে কিছুই রাখলাম না,
আর এটাই নিয়ম।
আমি চলে যাওয়ার পরে হয়তো তারা দেখবেন তোমায়,
আর সব সময় নিয়তিকে মেনে নিতে হবে,
যেটা চিরসত্য,,,,,, ব্যস,
এইটুকুই ছিলো বাবার শেষ কথা,,
এর পর চোখের এক কোনায় এক ফোটা অশ্রু,,
তার পর সোজা অন্ধকার ঘরে,,,,,,
এর পর বাবাও কখনো জানতে চাইনি,
আমি কেমন আছি ?
তারাও জানতে চাইনি,,
কিন্ত কি ভাবে ??
তারাও তো কেউ বাবা হয়েছে,
কেউ মা হয়েছে,
তাই না ?
তবে বাবা রেখে যাওয়া কিছু প্রতিবেশি সব সময় জানতে চাই,,
আমার চলার পথে অসুবিধার চেয়ে সুবিধার দিক গুলো,,,
এত টুকুই লেখকের জীবনী,,,,
Post Views: ২৬
এই বিভাগের আরো খবরঃ