শুক্রবার , ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চাকরি দেওয়ার নামে প্রায় ২২ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

মাওলানা আবুল বয়ান হাশেমির বিরুদ্ধে

বিশেষ প্রতিনিধি:

গত বছরের ২৪ আগস্ট ৭ টি পদে চাকরির বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছিলো চট্টগ্রামে র কুলগাও জালালাবাদে অবস্থিত আহছানুল উলুম জামেয়া গাউছিয়া কামিল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। সেখানে চাকরির জন্য আবেদন করেছিলেন দেশের প্রায় শতাধিক ব্যক্তি। তার মধ্যে প্রায় ১০-১২ জন ব্যক্তি চাকরির আশায় উক্ত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ জনাব মাওলানা আবুল বয়ান হাশেমির কথামতো আলী আকবর নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে প্রায় ২২ লক্ষ টাকা দেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।

চাকরির জন্য যারা টাকা দিয়েছেন, তারা হলেন- বাঁশখালীর আনোয়ার হোসেন ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, ফটিকছড়ির কুতুব উদ্দিন ৫ লক্ষ টাকা, বাঁশখালীর মো: দেলোয়ার ৫ লক্ষ ৫০ হাজার, চকরিয়ার মো: আব্দুল্লাহ ৩ লক্ষ টাকা, কুতুবদিয়ার মো: নিয়ামত উল্লাহ ১ লক্ষ ৩০ হাজার, বাঁশখালীর মো: বখতিয়ার ১ লক্ষ টাকা, আকবর ১ লক্ষ ৫০ হাজার, ও এড: জসীম উদ্দিন ২ লক্ষ টাকা দেন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী বাঁশখালীর দেলোয়ার হোসেন বলেন, উক্ত মাদ্রাসায় চাকরির আশায় মানুষের কাছ থেকে ধার করে অধ্যক্ষ বয়ান হাশেমির কথামতো আলী আকবর নামের এক ব্যক্তিকে ৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দিই। কিন্তু দির্ঘ এক বছর পেরিয়ে গেলেও চাকরির কোন খবর নেয়। অধ্যক্ষ বয়ান হাশেমির সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন আলী আকবর সব টাকা নিয়ে কোথায় পালিয়ে গেছে। তোমরা তার সাথে যোগাযোগ করো। দেলোয়ার আরও বলেন, শুনেছি ঐ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ দির্ঘদিন ধরে চাকরি দিবে বলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। গত মাসে নাকি পুনরায় চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন।

অথছ আগের বিজ্ঞাপণের মাধ্যমে চাকরির আবেদনকারীদের চাকরির কোন খবর নেই। এদিকে আমি এখনও চাকরিও পাইনি আমার টাকাও ফেরত পাইনি। এখন আমি খুব সমস্যায় আছি। আরেকজন অভিযোগকারী বাঁশখালীর আনোয়ার বলেন, পীর সাহেব হাশেমি হুজুরের মাদ্রাসা হিসেবে বিশ্বাস করে চাকরির আসায় তারা টাকা চাওয়ায় অফিসে গিয়ে অধ্যক্ষ মাও: আবুল বয়ান হাশেমির সামনে আলী আকবর নামের ঐ ব্যক্তিকে টাকাগুলি দিই। অনেক দিন পেরিয়ে গেলেও কোন সাড়া পাইনি। মাদ্রাসায় যোগাযোগ করলে বলেন আলী আকবর টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন। আগে ওনাকে খুঁজে বের করতে হবে এরকম অজুহাত দেখিয়ে প্রায় একটি বছর চলে গেলো। এখনও আমরা কোন সুরাহা পাচ্ছি না। এদিকে আমি স্বর্ণ বিক্রি করে ও ধার করে ৩ লক্ষ টাকা দিই।

এখন আমি বেকার হয়ে দুর্বিষহ দিনাতীপাত করতেছি। উক্ত মাদ্রাসায় আমার ৩ জন বন্ধও একিভাবে টাকা দেন। তাদেরও একি অবস্থা। এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ব্যাবস্থা নেওয়া না হলে আমাদের মতন আরও অনেক মানুষ কষ্ট পাবেন। তাই এই টাকা মেরে খাওয়ার বিষয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম ও প্রশাসনের নিকট তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। চকরিয়ার বাসিন্দা আব্দুল্লাহ বলেন, গত বছরের ২৪ আগস্ট দৈনিক পূর্বকোণ পত্রিকায় চাকরির বিজ্ঞাপণ দেখে লাইব্রেরিয়ান পদে আবেদন করি।

পরে চাকরি হবে মর্মে ৩ লক্ষ টাকা চাইলে যেভাবে পারি ব্যবস্থা করে দিই। কিন্তু এক বছর অতিবাহিত হলেও এখনও চাকরির কোন খবর নেয়। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের কাছে যোগাযোগ করলে টাকা নিয়ে এক ব্যক্তি পালিয়ে গেছেন বলে জানান মাওঃ আবুল বয়ান হাশেমি হুজুর। পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিকে না পাওয়া পর্যন্ত কিছু করার নেয় বলে জানা বয়ান হাশেমি।

কিন্তু যিনি পালিয়ে গেছেন বলে কর্তৃপক্ষের অভিযোগ তাকে টাকা দিছি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বয়ান হাশেমির কথায়। এখন তিনি অযৌক্তিক কথা বলে আমাদেরকে ঘোরাচ্ছেন। আমার টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য গণমাধ্যম ও প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি। এদিকে এবিষয়ে চট্টগ্রামের কুলগাও জালাবাদের দিন-ই পীর দেশের সুন্নি আলেমগণের ওস্তাদজী হাশেমি হুজুরের মাদ্রাসা আহছানুল উলুম জামেয়া গাউছিয়া কামিল মাদ্রাসার এক গোপন সূত্রে জানা যায়, চাকরির নামে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি সঠিক।

কিন্তু মাদ্রাসায় কর্মরত মাও: আলী আকবর চাকরির টাকা সহ মাদ্রাসার আরও অনেক টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যাওয়ার কারণে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তথা অধ্যক্ষ পীরজাদা বয়ান হাশেমি বিভ্রান্তিতে পড়ে গেছেন। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আলী আকবরকে খুঁজার চেষ্টায় আছেন। ওনাকে খুঁজে পেলে কোন একটা সুরাহা হবে বলে আশা করি।