শনিবার , ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের উনকোট গ্রামে প্রায় ৮০বছরের পুরনো পৈত্রিক সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল ও ভেকু মেশিনে মাটি উত্তোলণের অভিযোগ করেছেন একই গ্রামের ভুক্তভোগী জমির মালিক আমিনুল ইসলাম।
এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে ও জমিন উদ্ধারের দাবীতে গত বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) একই গ্রামের আবুল কালাম (৫৫) ও তাহার ২পুত্র সুলতান আহাম্মদ ও ফারুক হোসেনকে অভিযুক্ত করে চৌদ্দগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, বিবাধমান সম্পত্তি নিয়ে বিজ্ঞ আদালনে মামলা চলমান। কিন্তু অভিযুক্ত আবুল কালাম গং আদালতের মামলার তোয়াক্কা না করেই গত ২ই এপ্রিল (বুধবার) রাতের আধাঁরে ভেকু মেশিন দ্বারা আমার মালিকানার ভূমি জোরদখল ও মাটি উত্তোলণ করেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আবুল কালাম দাবী করেন, বিবাধমান সম্পত্তিতে আমি বৈধ মালিক।
লিখিত অভিযোগে বাদী আমিনুল ইসলাম উল্লেখ করেন, আরএস ২০৫নং খতিয়ানের আবুল বাশার বিগত ১০.০৫.১৯৬৪খ্রি. তারিখে আমার পিতা আঃ হকের নিকট সাবেক ৮৪২ দাগে ২৫শতক ভূমি বিক্রি করেন।
পরবর্তীতে আমাদের পিতার জীবদ্দশায় ও মৃত্যুপরবর্তী সময় পর্যন্ত সাবেক ৮৪২ হালে বিএস ১০৬২ দাগের বিবাধমান ভূমি ও উক্ত দাগের আমাদের পৈত্রিক ওয়ারীশি অপরাপর ভূমিসহ আমরা ভোগদখল করিয়া আসিতেছি।
আমার পিতা আঃ হক জীবদ্দশায় ১৯৯৯ সালে সাবেক ৮৪২ দাগে ০৫শতক ভূমি উনকোট কমিউনিটি ক্লিনিকের নামে দান করেন।
উক্ত ক্লিনিকের সাইনবোর্ডে জমিদাতা হিসেবেও আমার মরহুম পিতার নাম অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু বিএস জরিপের সময় পূর্বের ১৯৬৪ সালের দলিলের তথ্য গোপন করে সাবেক ৮৪২ হাল ১০৬২ দাগের আমাদের মালিকানার সাবেক ৮৪২ দাগের ১৮শতক বাশার চেয়ারম্যানের নামে বিএস খতিয়ান সৃজন করে।
আবুল বাশার চেয়ারম্যান জীবদ্দশায় বেশ কয়েকবার উক্ত বিএস সংশোধন করে দিবে বলে এবং মৃত্যু শয্যাকালীন সময়ে ছেলেদেরকে উক্ত বিএস সংশোধনের অনুরোধ করে যান। কিন্তু আবুল বাশারের মৃত্যুর পর ছেলেরা আমাদের মালিকানার ভূমি আমাদেরকে ফেরৎ না দিয়ে গোপনে নামজারী করে বিগত ২৮.১১.২০২২ইং তারিখে রেজিস্ট্রিকৃত ৯৫২৭নং সাফকবলা দলিলমূলে বিবাধি আবুল কালামের পুত্র সোলতান গংদের নামে একটি গোপন দলিল সৃষ্টি করে।
আমরা পরবর্তীতে দলিলের বিষয়ে অবগত হয়ে মোকাম কুমিল্লার বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ ৩য় আদালতে দেওয়ানী ১৩৬/২০২৩নং মামলা দায়ের করি।
বিবাদী আবুল কাশেম ও তাহার ছেলেরা আমাদের ৮০বছরের মালিকানা ও ভোগদখলের তোয়াক্কা না করে এবং বিজ্ঞ আদালতে মামলাকেও তোয়াক্কা না করে গত ২ই এপ্রিল রাতে ভেকু মেশিন দ্বারা মাটি উত্তোলণ শুরু করে। আমরা বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করেও বিবাধীদের সাথে থাকা অস্ত্রশস্ত্রসহ অবস্থানকারী বহিরাগতদের ভয়ে পিছিয়ে যাই এবং পরদিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আবুল কালাম দাবী করেন, বিবাধমান সম্পত্তি তিনি বৈধভাবেই আবুল বাশার চেয়ারম্যানের ছেলেদের থেকে ক্রয় করেছেন।
ক্রয়ের বহুদিন পরেও তিনি দখলে যেতে না পারলেও গত ২ই এপ্রিল তিনি বিবাধমান ভূমি দখলে যান এবং ঐখানে স্থাপনা নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই লিটন চাকমা জানান, আমি গতরাত (৩ই এপ্রিল) নিয়মিত ডিউটিতে ছিলাম। আজ সকালে (পরদিন) বিবাধমান বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগের কপি হাতে পাই। সরেজমিন তদন্ত করে অভিযোগের বিষয়টি সুরাহা করা হবে।